মহানবী (সা.)-এর জীবনে মিরাজের ঘটনা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যময়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁকে সব নবী-রাসুলের চেয়ে বেশি সম্মানিত করেছেন। এই ঘটনার প্রতি বিশ্বাস রাখা সব মুসলমানের কর্তব্য। তবে এই দিনের বিশেষ কোনো ইবাদতের কথা ইসলামে স্বীকৃত নয়। মহানবী (সা.), সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেইন থেকে এই রাতের বিশেষ কোনো আমলের কথা পাওয়া যায় না। তাই শবে মিরাজকে কেন্দ্র করে বিশেষভাবে রোজা রাখা, নামাজ আদায় বা অন্য কোনো ইবাদত করা অনুচিত। আলেমগণ এসবকে বিদাতের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন।
মিরাজের রাতকে কেন্দ্র করে রজব মাসের ২৭ তারিখে নামাজ আদায় ও রোজা রাখা সম্পর্কিত প্রচলিত সব হাদিসই জাল হাদিসের অন্তর্ভুক্ত। রোজা রাখা ফিকহের কিতাবে বলা হয়েছে, ‘রজবে প্রচলিত সালাতুর রাগায়েব সম্পর্কিত হাদিসগুলো বানোয়াট। আলেমগণ একে বিদাত বলেছেন। চতুর্থ শতকে এই নামাজ আবিষ্কৃত হয়। আর রজবের রোজার বিশেষ ফজিলতের কথা রাসুল (সা.) ও সাহাবিদের থেকে প্রমাণিত নয়। (লাতায়িফুল মাআরিফ: ১৩১; আল-মাজমাউ শরহুল মুহাযযাব: ৩ / ৫৪৯)
তাই শবে মিরাজের প্রধান শিক্ষা হলো, নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ যথাযথভাবে আদায় করার সংকল্প করা। কারণ এই রাতেই মহান আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে নামাজের বিধান দিয়ে ধন্য করেছেন। সরাসরি নামাজের বিধান দেওয়া থেকেই ফরজ নামাজের অসীম গুরুত্ব প্রমাণিত হয়।
এ ছাড়া মহানবী (সা.) রজব মাসের যে বিশেষ দোয়া শিখিয়েছেন তা বেশি বেশি পড়াই আমাদের কর্তব্য। দোয়াটি হলো—আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাদান। অর্থ: হে আল্লাহ, রজব-শাবানকে আমাদের জন্য কল্যাণময় করে দিন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। (মুসনাদে আহমদ: ২৩৪৬; শুআবুল ইমান: ৩৫৩৪; মুসনাদে বাযযার: ৬৪৯৪)
মুফতি আবু দারদা, ইসলামবিষয়ক গবেষক