গাজীপুরের শ্রীপুরের দুই বধ্যভূমির গণকবরগুলোতে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের মতো বিশেষ দিবস এলে চলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। এরপর সারা বছর বছর গণকবরগুলো পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাতখামাইর গণকবরের ভেতর ঝোপঝাড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করা হয়েছে। সীমানাপ্রাচীর থাকলেও নেই কোনো গেট। যে কারণে যে কোনো সময় গরু-ছাগল গণকবরের ভেতরে প্রবেশ করে।
আর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সংলগ্ন বধ্যভূমিতে পোকামাকড়ের ঘর-বসতি। এখানেও চড়ে বেড়ায় গরু-ছাগল। গেটবিহীন তিন ফুট সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বধ্যভূমিতে নেই কোনো স্মৃতিফলক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী কলেজ মাঠের একপাশে ১২ জন শহীদের গণকবর রয়েছে। কেওয়া আকন্দবাড়ীর নজরুল ইসলাম ‘মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ায় তাঁর বাবা ফকির আলমগীর বাদশাকে রাজাকারদের সহায়তায় ধরে এনে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। তাঁর বাবার সঙ্গে কমপক্ষে আরও ১১ জনকে হত্যার পর সেখানে গণকবর দেওয়া হয়।’
শ্রীপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (সাবেক) সিরাজুল হক বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর হলেও প্রকাশ করা হয়েছে রাজাকারদের প্রাথমিক তালিকা। রাজাকারদের সহযোগিতা ও হানাদারদের নৃশংসতায় যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রয়োজন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরে উপজেলা পরিষদ থেকে স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেছে। কিন্তু স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শুরু হয়নি।’
শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল আলম প্রধান বলেন, উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী কলেজ মাঠের এক পাশে শহীদের গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’