চার বছরের আয়ান রহমান। যেখানে মায়ের কোল ছিল এই শিশুর নিরাপদ স্থান, সে মা-ই কিনা তাকে জবাই করে হত্যা করলেন। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর সদরের লাহারকান্দি এলাকায়।
নারকীয় এ হত্যাকাণ্ড জেলাসহ দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের মনে নাড়া দেয়। ওই রাতে শিশুকে জবাই করে হত্যার পর মা সাবিনা ইয়াসমিন নিজেও গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করলে শিশু জবাই করার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর থেকে কারাগারে দিন কাটছে তাঁর।
কারাগারে হা-হুতাশ করে দিন কাটছে শিশু হত্যাকারী সাবিনার। সন্তান হত্যার জন্য তিনি অনুতপ্ত বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের জেলার মো. শাখাওয়াত হোসেন।
জেলা কারাগারের জেলার বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে শিশু হত্যা মামলার আসামি হয়ে কারাগারে আসেন সাবিনা ইয়াসমিন। প্রথমে খাওয়া-ধাওয়া করতে চাইতেন না তিনি। পরে ধীরে ধীরে খাওয়া-ধাওয়া স্বাভাবিক হলেও হা-হুতাশ করতে দেখা যায়। সাবিনার জিজ্ঞাসা, কবে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন তিনি! নাকি সারা জীবন এভাবেই চার দেয়ালের ভেতর কাটবে তাঁর!
এদিকে সাবিনার শ্বশুর হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কেন কী কারণে চার বছরের শিশুকে জবাই করে হত্যা করল সে। আজও তা মনে নিতে পারছি না। এ ঘটনার পর সৌদিতে কর্মরত আজগর রহমান আজিম অনেকটাই অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছেন। ঠিকমতো কাজকর্ম করতে পারছেন না।
সৌদিপ্রবাসী আজগর রহমানের স্ত্রী সাবিনা চার বছরের শিশু আয়ানসহ যৌথ পরিবার লক্ষ্মীপুর সদরের লাহারকান্দি গ্রামের হাফিজ খাঁর বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার দিন রাতে মোবাইল ফোনে স্বামী আজগর আলীর সঙ্গে ঝগড়া হয় সাবিনার। এরপর রাতেই তিনি ধারালো বঁটি দিয়ে আয়ানকে জবাই করে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা করেন সাবিনার শ্বশুর হুমায়ন কবির। সেই মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি এখন জেলে।