পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবং পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করায় কুষ্টিয়ার খোকসায় পাট চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকেরা। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট আবাদ হয়েছে।
চাষিদের দাবি, তাঁদের থেকে ব্যবসায়ীরা বেশি লাভবান হন। তাই সরকারিভাবে পাট কেনার দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠের পর মাঠ পাটগাছ। কোথাও কোথাও চাষিরা পাটের পরিচর্যা করছেন। কয়েক স্থানে পাট কাটার দৃশ্যও দেখা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৩০ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ৪৫১ হেক্টর। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২১ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। উপজেলার ২৮টি ব্লকে এবার এ পাটের আবাদ হয়েছে। বেশি চাষ হয়েছে উন্নত জাতের তোষা পাট-৮ (রবি-১)।
উপজেলার জয়ন্তীহাজরার পাটচাষি লালটু শেখ বলেন, ‘এবার ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটগাছের বয়স দেড় মাস পূর্ণ হয়েছে। গাছ অনেক ভালো হয়েছে। এবার ভালো ফলন পাব, ইনশাল্লাহ।’
শিমুলিয়া ইউনিয়নের বসুয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই জানান, ৪০ শতক জমিতে তিনি পাট চাষ করেছেন। একই গ্রামের কৃষক শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘১ বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। সাধারণত পাট উৎপাদন হয় ১২ থেকে ১৪ মণ।’
জয়ন্তীহাজরার রমজান আলী ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবার চাষ করেছি। অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে।’
একই এলাকার কৃষক লিয়াকত আলী জানান, কৃষকের তুলনায় বেশি লাভ করেন পাট ব্যবসায়ীরা। গরিব হওয়ায় কৃষকেরা পাট উঠলেই তা বিক্রি করে দেন। তাই তুলনামূলক কম দাম পান চাষিরা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা বলেন, কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে দেখাশোনা করায় ফলন ভালো হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভর্তুকি কৃষকদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ায় তাঁরা আরও বেশি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, চলতি বছরের আবহাওয়া পাট চাষের উপযোগী হওয়ায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। এবার যথাসময়ে পাট পচানোর জন্য পানির ব্যবস্থা হলে কৃষক লাভবান হবেন।