মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে নাশকতা মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশে তাঁকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। আসামি কামরুল হাসান (৩২) সিঙ্গাইরের পশ্চিম বাস্তা গ্রামের বাসিন্দা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য।
জানা গেছে, ১ ডিসেম্বর নাশকতার অভিযোগে সিঙ্গাইর থানায় একটি মামলা করেন উপজেলা শ্রমিক লীগ নেতা আকাশ আহমেদ। এতে বিএনপির নেতা-কর্মীসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামরুল হাসানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে কামরুল হাসান জানান, মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে বাড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমানের সুপারিশে সন্ধ্যা সাতটার দিকে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়। তিনি দাবি করেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাঁকে আসামি করেছেন বাদী।
এজাহারের বরাত দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত ৩০ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিঙ্গাইরের গাজিন্দা এলাকায় মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে বিএনপির নেতা-কর্মীরা টায়ার জ্বালানি বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় অটোরিকশায় সেখান দিয়ে আকাশ আহমেদকে যেতে দেখে সড়কের ওপর এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান তাঁরা। পরে নিরাপদ স্থানে গিয়ে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন আকাশ আহমেদ বাদী হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করে সিঙ্গাইর থানায় নাশকতার মামলা করেন। মামলার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামরুল হাসানকে ৯ নম্বর আসামি করা হয়।
এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও মামলার বাদী আকাশ আহমেদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যার পর তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান বলেন, ‘আমি থানায় গিয়ে দেখি, কামরুল হাসানকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এলাকায় খবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সে স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পরে বাদী আকাশের জিম্মায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে নাশকতার মামলায় তাঁকে আসামি করা হতে পারে।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্ল্যা বলেন, ‘বাদী ভুল করে এজাহারে কামরুল ইসলামের নাম দিতে পারেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।’ তবে মামলায় গ্রেপ্তারের পর আসামি ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কামরুল হাসানকে ধরা হয়নি।’