পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রচারের সময় তিন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে এক চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১০ জন।
ইউনিয়নের চারা বটতলার ইন্দারা মোড় কালুরপাড়া এলাকায় গতকাল শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ ও দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত হয়েছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াছিন আলম (৪০)। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহত হওয়ার পর ভাঁড়ারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। ইউপি নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর এখানে ভোট হবে।
পাবনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ভোট স্থগিত করার তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো ঘটনায় বৈধ প্রার্থী নিহত হলে আইনানুযায়ী সংশ্লিষ্ট পদের নির্বাচন স্থগিতের বিধান রয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৩ জনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন ভাড়ারা গ্রামের রিয়াদ হোসেন (২২), তুহিন আহমেদ (২৩), আব্দুর রহিম (৩৩), হোসেন আলী (৫০), রুবেল হোসেন (৩০), নলদহ গ্রামের আল্লেক শেখ (৪০), জসিম উদ্দিন (৩৫), আবু তালেব (৩২), তুহিন হোসেন (২৭) আব্দুল্লাহ (৩৫), লালু শেখ (৩৩), মোস্তফা (৪০), আল আমিন (২৮)। বাকিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘গত শুক্রবার রাতে সাঈদ চেয়ারম্যানের লোকজন আমার অন্তত ৪/৫ জন কর্মীর বাড়িতে গিয়ে গুলি করে। আমার পক্ষে ভোট না-করতে হুমকি দেয়। তখন থেকেই এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সকালে আমার লোকজন তাদের বাড়িতে গেলে চেয়ারম্যানের লোকজন আমার লোকের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুলি করে। গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হন।’
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু সাঈদ খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রাতে আমার লোকজন নৌকার ভোট চাইতে গেলে কালাম মেম্বার নামের একজনকে হাতুড়িপেটা করে সুলতানের লোকজন। সকালে আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। ফিরে আসার পথে সুলতানের লোকজন আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি করে। এ সময় আমাকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ধরলে আমার ছোট ভাইয়ের পায়ে গুলি লাগে। এ সময় আমি পাশের ড্রেনে লাফিয়ে না-পড়লে আমাকে তারা হত্যা করত। এ ঘটনায় আমার কয়েকজন সমর্থক গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন।’
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রাশেদুল ইসলাম বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০-১২ জনকে এই হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে। আর কয়েকজনকে রাজশাহী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভাড়ারা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। অন্তত ৮-১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’