বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে বিপাকে পড়েছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষকেরা। তলিয়ে গেছে উপজেলার বেশ কিছু এলাকার জমির পাকা ও আধা পাকা ধান। ক্ষতি হয়েছে অন্য ফসলেরও।
গত শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। যা থেমে থেমে গতকাল শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। স্থানীয় আবহাওয়া কার্যালয় জানায়, এ দুই দিনে উপজেলায় গড়ে ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা রংপুর বিভাগে সর্বোচ্চ। ভারী এই বৃষ্টিপাতে ধানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ব্রি-ধান ৮১, ব্রি-ধান ৮২, ব্রি-ধান ২৮, ব্রি-ধান ২৯, জিরাশাইলসহ হাইব্রিড জাতের বেশ কিছু ধানের আবাদ করেছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া দুই হেক্টর প্রদর্শনী প্লটে প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু ধান ১০০।
ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষক বলেন, ‘এর আগেও শিলাবৃষ্টি আর পানি বৃদ্ধির কারণে তলিয়ে যায় অনেক জমি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবার ফসল উৎপাদনে খরচটাও উঠবে না হয়তো।’
উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া এলাকার হামিদুর রহমান বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ ধানের আবাদ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছে। আর ১০ দিন গেলেই ফসল ঘরে তুলতাম। কিন্তু দুই দিনের বৃষ্টিতে সব ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।’ উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের অসুরখাই গ্রামের ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘ঋণ নিয়ে নিজের দেড় বিঘা এবং চুক্তিতে আরও দুই বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ফসল ঘরে তুলে মেয়ের বিয়ে দেব বলে স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে স্বপ্ন যেন ভেসে গেল।’
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিতে কৃষির ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা চলছে। তবে জমিতে পানি জমে থাকলেও ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।’