মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে নতুন করে আলুর জমির পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এ উপজেলায় প্রধান অর্থকরী ফসল হচ্ছে আলু। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের রূপ দিতে মাঠে কাজ করছেন তারা।
কৃষকেরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে টানা বৃষ্টির কারণে রোপণ করা আলুর জমির ক্ষতি হয়েছে। সেটা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য দ্বিতীয়বার আলু রোপণ করে সেই আলুর জমি পরিচর্যা করছেন তাঁরা।
গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের আলুর জমিগুলোতে সেচ (পানি) দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই আগাছা পরিষ্কার এবং জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। সব মিলিয়ে তাঁরা আলু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যার মধ্যে মৌসুমের শুরুতে টানা বৃষ্টিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। এবার ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে।
গোবরদী গ্রামের কৃষক মো. ইয়াসিন বলেন, ‘আমি এবার ৮৪০ শতাংশ জমিতে আলু রোপণ করেছিলাম। আমার প্রায় ৯ লাখ টাকার ওপরে খরচ হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে আমার অনেক জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে আমার ৬ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। দ্বিতীয়বারের মতো আবার আলু বুনেছি। এতে অনেক টাকার মতো খরচ হয়েছে। সেই টাকা উঠবে কি না সেটা জানি না। তবে এখন পর্যন্ত আলুর গাছ ভালো দেখা যাচ্ছে। সে জন্যই আলু গাছের পরিচর্যা করছি, যাতে করে ফলন ভালো হয়। ফলন ভালো হলে বিক্রি করে যাতে করে লোকসান পোষাতে পারি, সে স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছি।’
আরেকজন কৃষক মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘আমার প্রায় ২৭ কানি জমির আলু নষ্ট হয়েছে। এতে আমার প্রায় ৩৬-৩৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তারপরও নতুন করে আবার আলু রোপণ করেছি। সে আলু গাছের পরিচর্যা করছি। জানি না এবার ফলন কেমন হবে। তবে এখন পর্যন্ত গাছ ভালো দেখা যাচ্ছে। যদি শীত একটু বেশি দিন থাকে, তবে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার জানান, এবার মৌসুমের শুরুতে কৃষকদের যে একটা ধাক্কা গেল! তারপরও তাঁরা নতুন করে আলু রোপণ করছেন, সে আলু গাছের পরিচর্যা করছে তাঁরা। তবে এখন পর্যন্ত আলুর ফলন আশানুরূপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।