শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। ভোটারেরা উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি। ভোট দিয়েছেন বয়স্করাও। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট উৎসব মুখর পরিবেশে হয়েছে। শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের আবুয়ারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভাতিজার কোলে চড়ে ভোট দিতে আসেন আব্দুল সেখ। তার বয়স ১২৩ বছর। বাড়ি ইউনিয়নের দেয়ারচর পূর্বপাড়ায়।
সরেজমিনে আবুয়ারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল সেখকে প্রথমে রিকশা দিয়ে কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তাঁর ভাতিজা আবু বকর। পরে আবু বকরের কোলে ওঠে ভোট কেন্দ্রের ভেতরে গিয়ে ভোট দেন তিনি। আব্দুল সেখ আধো আধো কণ্ঠে বলেন, ‘কয়দিন বাঁচি ঠিক নাই। তাই জীবনের শেষ ভোটটা আজকে দিবার আইছি ভাতিজার কোলে চইড়া।’ তার ভাতিজা আবু বকর বলেন, ‘আমার চাচা বয়সের ভারে হাঁটতে পারেন না। হয়তো এটাই শেষ ভোট। এ জন্য ভ্যানগাড়ি করে তাঁকে ভোট দিতে নিয়ে এসেছি।’
আবুয়ারপাড়া কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবু রায়হান জানান, এ কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ২৪১ জন। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের আগে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
চিথলিয়া গ্রামের ভোটার আফরোজা আক্তার বলেন, ‘আমি আজ আমার জীবনের প্রথম ভোট প্রয়োগ করিলাম। আমার খুব ভালো লাগছে। তাতিহাটী ইউনিয়নের পোড়গর গ্রামের আঃ জলিল (৯০) বলেন, শুনছি ভোট দেওয়ার সুন্দর পরিবেশ আছে, তাই ভোট দিতে এসেছি।
কুরুয়া উত্তর পাড়া গ্রামের জরিনা বেগম বলেন, ‘সকালে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিয়েছি। ভোট দিতে পেরে খুবই ভালো লাগেছে।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা আক্তার বলেন, ৯টি ইউপিতেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের এই সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আমরা কাজ করেছি এবং ভোটের দিন তার প্রতিফলন ঘটেছে। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বিশেষ করে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ পেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সব মিলিয়ে নির্বাচন নিয়ে আসন্তুষ্ট।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানায়, এবার নির্বাচনে শ্রীবরদীর ৫৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৩২৯ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থী ও ১৩৫ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৫৯ জন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কাজ করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন নির্বাচনী কাজে।