ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ৬টি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে দেওয়ার পরেও তা চালু করা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় মালিকেরা ইটভাটা চালু করেছেন বলে জানা গেছে। ড্রাম চিমনি নির্মাণ করে পোড়ানো হচ্ছে ইট। এসব ভাটায় ইট পোড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। এতে আশপাশের বন যাচ্ছে উজাড় হয়ে। একই সঙ্গে ফসলি জমি ও এলাকার খালের মাটি এনে তৈরি করা হচ্ছে ইট।
তবে ভাটামালিকেরা বলছেন, নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন বা ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে উঠেছে প্রায় ১০টি ইটভাটা। প্রশাসনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ইট পোড়ানোর দায়ে ২০২১ সালে ভেঙে দেওয়া হয় রাত্রী ব্রিকস, আখন ব্রিকস, রিফাত ব্রিকস, মাওয়া ব্রিকস, ফরাজি ব্রিকস ও নিলিমা ব্রিকস।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাটাগুলোতে রয়েছে গাছ কাটার স মিল। এখানে গাছ কেটে পোড়ানো হচ্ছে ইট।
কৃষক সালাম হাওলাদার বলেন, ‘প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কয়েকটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিলেও পুনরায় তা অসাধু কর্তা-ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে চালু করা হয়েছে।’
কৃষক লতিফ মিয়া বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটার কারণে ৬ একর জমিতে কোনো ফসল ফলাতে পারছি না। জমিগুলো কারও কাছে ইজারা দিতেও পারছি না। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় চাষিরা এই জমি নিতে চাচ্ছেন না।’
ভেঙে ফেলা ইটভাটা পুনরায় চালুর বিষয়ে ইটভাটা মালিক আবুল হোসেন (ফরাজী ব্রিকস) বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এরপরও প্রশাসন অভিযানে চালিয়ে ভাটা ভেঙে দেয়।’
ইটভাটা মালিক মো. জয়নাল (রিফাত ব্রিকস) বলেন, ‘অভিযানে প্রশাসন ভাটা ভেঙে দেওয়ায় লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। ছাড়পত্রের জন্য পরিবেশবান্ধব জিকজাক ভাটা নির্মাণে প্রচুর ইটের প্রয়োজন। তাই পরিবেশবান্ধব চিমনি তৈরি করতে কিছু ইট পোড়ানো হচ্ছে।’
ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, ‘ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। ২০২১ সালের মার্চে অভিযান চালিয়ে চর কলমী, বকসীঘাট ও মায়া ব্রিজ এলাকায় আবুল হোসেনের ফরাজী ব্রিকস, জয়নালের রিফাত ব্রিকস ও রাসেল পণ্ডিতের মাওয়া ব্রিকস গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া শানিমা-২, মাইশা-২ ও ফরাজী ব্রিকসে অভিযান চালিয়ে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ভেঙে ফেলা যেসব ইটভাটা পুনরায় চালু করা হয়েছে, সেগুলোর কোনো অনুমোদন নেই।’