পাবনার সাঁথিয়ায় খেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। তবে উৎপাদন ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশায় ভুগছেন তাঁরা। অন্যদিকে দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।
সাঁথিয়া কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার ১৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে আবাদ হয়েছে অতিরিক্ত ৭৫০ হেক্টর বেশি জমিতে।
সাঁথিয়ার কৃষকেরা সাধারণত অক্টোবরে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করেন। তখন জমি জলাবদ্ধ থাকায় কাদামাটির ওপর ছাই ব্যবহার করে বীজতলা করা হয়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রোপণ করা হয় পেঁয়াজ। এখন কৃষকেরা ফসল সংগ্রহে ভোরবেলাতেই মাঠে উপস্থিত হচ্ছেন। এই কাজে কৃষিশ্রমিকদের পাশাপাশি বাড়ির নারী ও শিশুরাও সাহায্য করছে। নারীরা গভীর রাত পর্যন্ত পেঁয়াজের অগ্রভাগ কাটায় ব্যস্ত থাকছেন।
উপজেলার কাশিনাথপুর ও বোয়াইলমারী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে পেঁয়াজ ৭০০ থেকে ৮৮০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দামে হতাশ কৃষকেরা। তবে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হওয়ায় ক্রেতারা খুশি মনে কিনছেন।
সাতানির চর গ্রামের রওশন মণ্ডল জানান, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণ থেকে শুরু করে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত খরচ হয় ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। সে তুলনায় দাম না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।
বোয়াইলমারী গ্রামের চাষি আমজাদ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, হাটে পাঁচ মণ পেঁয়াজ এনেছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ৭৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। কিন্তু এক মণ পেঁয়াজ উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। এখন ঋণের টাকা দিতে জায়গা-জমি বিক্রি করতে হবে।
সাঁথিয়ার বোয়াইলমারী গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম কমে আসায় তাঁরা খুশি হয়েছেন। এভাবে সব পণ্যের দাম কমে এলে দুই বেলা খেয়ে বাঁচতে পারবেন।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, মৌসুমের সময় দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের দাম কম। উপজেলার সম্পন্ন কৃষকেরা বেশি দামের আশায় জমির পেঁয়াজ ঘরে সংরক্ষণ করছেন। তবে ছোট কৃষকেরা খরচ মেটাতে হাটে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী জানান, চলতি বছর পেঁয়াজের ভালো উৎপাদন হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সাধ্যমতো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি না হলে কয়েকদিনের মধ্যে কৃষকের ঘরে উঠবে পেঁয়াজ।