মুরগি ও মুরগির খাবারের দাম বাড়ায় ব্যবসা ছাড়ছেন বরগুনার পাথরঘাটার খামারিরা। এতে সব ধরনের মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে পাথরঘাটায়। এ জন্য মঠবাড়িয়া, বামনা, খুলনাসহ আশপাশের এলাকা থেকে মুরগি সরবরাহ করে বিক্রি করতে হচ্ছে পাথরঘাটার ব্যবসায়ীদের। এতে কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। এতে নিম্ন আয়ের মানুষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে মুরগি কিনতে।
পাথরঘাটা বাজারের মুরগি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজার ঈদের পর বিয়ের অনুষ্ঠান বেশি থাকে। তাই রোস্টের জন্য মুরগির মাংসের চাহিদা অনেক বেশি। এ কারণে পাথরঘাটায় মুরগি খামারিদের মুরগি শেষ হয়ে গেছে। অপরদিকে মুরগির বাচ্চাসহ মুরগির খাবারের দাম বাড়ায় খামারিরা নতুন মুরগি নিচ্ছেন না। তাই বাজারে স্থানীয় মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মুরগি এনে বিক্রি করায় দাম একটু বেশি রাখা হচ্ছে।
মুরগি কিনতে আসা আব্দুস সোবহান, শাকিল ও হারুন বলেন, আমাদের নিম্ন আয়ের মানুষের মাংসের চাহিদা পূরণ করতে কম দামে মুরগির মাংস খেতাম। কিন্তু দিন দিন এভাবে দাম বাড়তে থাকলে মাংস না খেয়েই থাকতে হবে।
পাথরঘাটা বাজারের হাওলাদার পোলট্রি ফিডের স্বত্বাধিকারী মাসুম বিল্লাহ বলেন, তাঁর প্রায় বিশ লাখ টাকার দাদন দেওয়া রয়েছে খামারিদের। মুরগির বাচ্চা ও খাবারের দাম বাড়ায় তাঁর আটজন খামারি লোকসান দিয়ে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন।
খামারি এমাদুল, সুমন ব্যাপারী, বাবু অনিমেষ ও কবির খান অভিযোগ করেন, ধাপে ধাপে মুরগির খাবারের দাম বস্তাপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যে খাবার ১ হাজার ৮০০ টাকায় কিনেছেন, তা এখন ২ হাজার ৭৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এ কারণে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই তাঁরা খামার বন্ধ করে দিয়েছেন।
পাথরঘাটা বাজার মুরগি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলম হোসেন বলেন, পাথরঘাটায় প্রতিদিন এক হাজার কেজি ব্রয়লার ও ৪০০ থেকে ৫০০টি অন্যান্য মুরগির চাহিদা রয়েছে। কিন্তু খামারে মুরগি না থাকায় স্থানীয় চাহিদা মেটাতে মঠবাড়িয়া, বামনা, খুলনাসহ আশপাশের এলাকা থেকে মুরগি সরবরাহ করে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে যাতায়াত খরচের পাশাপাশি বেশি দাম দিয়েও কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশি মুরগি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ৩৫০ টাকা বিক্রি হতো। ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে বেড়ে ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। অপরদিকে সোনালি মুরগি ২৫০ থেকে বেড়ে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ মুরগির দাম বাড়ায় ক্রয়ক্ষমতা হারাচ্ছেন।