গাছের পেরেক মুক্ত করা আর গাছ লাগানো যাঁর নেশা—সেই গাছবন্ধু পিয়ারুল ইসলাম এবার শেখ রাসেল দিবস পালনে তাঁর ৫৮তম জন্মদিনে ৫৮টি তালবীজ রোপণসহ এ পর্যন্ত ৪ হাজার তালবীজ রোপণ করেছেন। তাঁর বাড়ি ভেড়ামারার কলেজপাড়ায়। পেশায় একজন কৃষক।
জানা গেছে, পিয়ারুল ইসলাম ২০১৭ সাল থেকে বৃক্ষরোপণ শুরু করেন। এর পর থেকেই এলাকায় তিনি খ্যাতি পেয়েছেন গাছবন্ধু হিসেবে। ২০২০ সাল থেকে জোর দিয়েছেন তালবীজ রোপণে।
তাঁর রোপণ করা গাছের মধ্যে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় ঔষধি গাছ গুয়ে বাবলা ও সোনালু জাতের গাছ। তিনি সড়ক ও রেললাইনের পাশসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চারা রোপণ করে চলেছেন। পাশাপাশি সেগুলো তিনি নিজে দায়িত্বে পরিচর্যাও করেন।
পিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘তালগাছ বজ্রপাত প্রতিরোধ করে। একসময় অনেক তালগাছ চোখে পড়ত, এখন কমে গেছে। তাই রাসেল দিবসকে সামনে রেখে গত বছর থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তালবীজ রোপণ করেছি। তালগাছ সর্বোচ্চ ২০০ বছর অনায়াসেই বেঁচে থাকতে পারে।’
তালতলা মাদ্রাসার শিক্ষক আলহাজ কারি সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘এখানে তালগাছ ছিল, সে জন্য এ মহল্লার নাম হয়েছে তালতলা। মসজি ও মাদ্রাসার নামকরণ হয়েছে তালতলা নামে। অথচ এখন এখানে তালগাছ নেই। পিয়ারুল ইসলাম নামের যথার্থ প্রমাণে তালবীজ রোপণ করেছেন। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ।’
এ বিষয়ে পরিবেশবিদ গৌতম কুমার রায় আজকের পত্রিকাকে জানান, বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বাতাসে মিথেন গ্যাসের আধিক্যের কারণে বজ্রপাত বাড়ছে। উঁচু গাছ হিসেবে তালগাছ থাকলে মানুষের প্রাণহানি কমে। তাই পিয়ারুলের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
গৌতম কুমার রায় আরও বলেন, সরকারের উচিত নদীর পাড়, রাস্তার দুই পাশে তালগাছ রোপণের উদ্যোগ নেওয়া। তবে ব্যক্তি উদ্যোগে পিয়ারুল যে তালগাছ রোপণ করে চলেছেন—তা খুবই ভালো।
ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র আনোয়ারুল কবির টুটুল বলেন, ‘একসময় রাস্তার পাশ দিয়ে প্রচুর তালগাছ ছিল। এখন আর নেই। পিয়ারুল অনেক তালবীজ রোপণ করেছেন। তাঁর এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’
কুষ্টিয়া সামাজিক বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘দুর্যোগ ও বজ্রপাত প্রতিরোধে তালগাছের ভূমিকা রয়েছে। সরকারিভাবে তালবীজ রোপণ করা হচ্ছে। তবে ব্যক্তি উদ্যোগে তালবীজ রোপণে পিয়ারুলের ভূমিকা প্রশংসনীয়।’