চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উৎপাদন বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেএফডি জুট মিলসসহ দেশের পাঁচটি পাটকলকে বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের চুক্তি সম্পাদনের কথা ছিল আজ বৃহস্পতিবার। তবে বিজেএমসি চেয়ারম্যানের অসুস্থতার কারণে সেই চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ পিছিয়েছে।
কেএফডির প্রকল্পপ্রধান নুরুল আলম ভূঞা এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে কবে চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে, এ বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য পাননি বলে জানান।
এদিকে জাতীয় শ্রমিক লীগ কেএফডি জুট মিলস শাখার সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম জানান, কেএফডি ছাড়াও দেশের আরও চারটি পাটকল ইজারা দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার হাফিজ জুট মিলসও রয়েছে। বাকি তিন প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুট মিল, খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিল ও নরসিংদীর বাংলাদেশ জুট মিল। তিনি বলেন, কেএফডিতে উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। এসব শ্রমিকের মজুরি কমিশনের বকেয়া, করোনাকালীন মজুরি ও সাধারণ ছুটির পূর্ণ মজুরি বাবদ প্রায় সোয়া ছয় কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।
শুধু কেএফডি জুট মিলের এক হাজার শ্রমিকের সবকিছু মিলিয়ে পাওনা দাঁড়ায় ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। তিনি বলেন, সব কটি মিলের শ্রমিক সংখ্যা ৮ হাজারের বেশি। এসব শ্রমিকের মোট পাওনা হলো প্রায় ৪৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করেই মিল হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, শ্রম ও কর্ম সংস্থান প্রতিমন্ত্রী বরাবরে আবেদন করেছি। রাঙ্গুনিয়ার সাংসদ ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতও প্রধানমন্ত্রী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বরাবর সুপারিশ করেছেন। কিন্তু শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কার্যকর পদক্ষেপ কোনো পক্ষই নেয়নি। চাকরিহারা শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।’
লাগাতার লোকসানের মুখে থাকা দেশের ২৫টি পাটকল বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে ২০২১ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। এতে দেশি-বিদেশি ৫৯টি প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়। সেই দরপত্র যাচাই-বাছাই শেষে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঁচটি পাটকল ইজারা দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
কেএফডির প্রকল্পপ্রধান নুরুল আলম ভূঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই দেখছে। এখানে আমাদের করার কিছু নেই।’