‘সন্তানকে মানুষ করতে সামান্য মুদি দোকানি হয়ে শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতাম। স্বপ্ন ছিল ছেলে এক দিন বড় মানুষ হবে। দশের কল্যাণে আসবে। একজন গর্বিত পিতা হয়ে সমাজে মুখ উজ্জ্বল হবে। কিন্তু সব স্বপ্ন হত্যা করে সারা জীবনের কান্নায় পরিণত করে দিল একটি দুর্ঘটনা।’
গতকাল রোববার বিকেলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ফটিকছড়ির কিপাইতনগর গ্রামের বাসিন্দা ডেমু ট্রেনের ধাক্কায় নিহত সাতরাজ উদ্দিন শাহীনের বাবা মুহাম্মদ ফজল করিম।
গত শনিবার চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানার ঝাউতলা রেলক্রসিং এলাকায় নাজিরহাট থেকে শহরগামী ডেমু ট্রেনের ধাক্কায় এক পুলিশসহ তিনজন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে দুজনের বাড়ি ফটিকছড়িতে। গত শনিবার রাতে দুজনের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, শাহীনেরা দুই ভাই। ছোট ভাই সায়মন দশম শ্রেণিতে পড়ে। শাহীন পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। কলেজে যাবে বলে ঘর থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। ফিরেছে লাশ হয়ে।
শাহীনের মা শামীমা আকতার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ট্রেনের নিচে পড়ে ছেলে শাহীন “বাঁচাও বাঁচাও” বলে চিৎকার করেছিল বলে শুনেছি। কিন্তু কেউ বাঁচাতে পারেনি আমার বুকের ধনকে।’
নিহত অন্যজন হলেন উপজেলার নানুপুর গ্রামের সৈয়দ বাড়ির সৈয়দ বাহাউদ্দিন সোহাগ। তাঁর বাবার নাম সৈয়দ সোহরাব হোসেন। সোহাগ পেশায় একজন প্রকৌশলী। তিনি পরিবারের সঙ্গে নগরীর হামজারবাগ এলাকায় থাকতেন।
সোহাগের বাবা সৈয়দ সোহরাব হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলে প্রকৌশলী হওয়ায় স্বপ্ন দেখেছিলাম, এক দিন বড় লোক হব। কিন্তু সে স্বপ্ন নিমেষেই মিশে গেছে। আমি এখন কোথায় পাব আমার সন্তানকে।’