হোম > ছাপা সংস্করণ

মার্কেটের ছাদে ডালপালা ছড়িয়ে গাছের মৃত্যুঘণ্টা

রাজশাহী প্রতিনিধি

বিশালাকারের নিমগাছটির নিচে সব সময় একটা প্রতিমা থাকে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সেখানে পূজা-অর্চনা করেন। পাশেই নিমগাছের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি কড়ইগাছ। গাছটি এখন কাটার চেষ্টা শুরু করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। গাছটির অপরাধ—এটির কয়েকটি ডালপালা চলে গেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির মার্কেটের ছাদে।

এই গাছ দুটি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী বাজারে। প্রতিবছর কয়েক লাখ সনাতন ধর্মাবলম্বী আসেন এই প্রেমতলীতে।

প্রেমতলী মানেই সবার চোখে ভেসে ওঠে নিম ও কড়ইগাছ। কিন্তু কড়ইগাছটি কাটার জন্য গত সোমবার স্থানীয় কয়েকজন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এই আবেদনের প্রধান উদ্যোক্তা মাইনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (ইউপি) রুহুল আমিন নয়নও তাঁর পক্ষে আবেদনে সই করেছেন।

কিন্তু খবরটি জানাজানি হলে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে। এলাকার অসংখ্য প্রতিবাদী তরুণ, যুবা ও বৃদ্ধ ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে পরিবেশ রক্ষায় গাছ দুটি বাঁচানোর আকুতি জানিয়েছেন। সওজ গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিলে প্রতিবাদী কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা। এ ছাড়া গোদাগাড়ীর আইনজীবী সালাহউদ্দিন বিশ্বাস গাছ দুটি রক্ষার বিষয়ে বিনা পারিশ্রমিকে আইনগত সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, স্থানীয় একটি মহল খুব সূক্ষ্মভাবে গাছ কাটার পরিকল্পনা করেছে। সম্প্রতি প্রেমতলী থেকে খেতুর হয়ে শিয়ালা পর্যন্ত রাস্তাটি ১০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১৬ ফুট করার কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজের অজুহাতে প্রভাবশালী মহল দুই গাছের গোড়ায় দীর্ঘদিন ব্যবসা করা সবজি ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করেছে। এখন প্রভাবশালী মহলটি বলছে, কড়ইগাছটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কেটে ফেলতে হবে।

তবে স্থানীয়রা বলছেন, গাছটি ঝুঁকিপূর্ণ নয়। শুধু কয়েকটা ডালপালা চলে যাওয়ায় মাইনুল ইসলাম তাঁর মার্কেটের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। তাই তিনি গাছটি কাটার চেষ্টা করছেন।

যোগাযোগ করা হলে মাইনুল ইসলাম বলেন, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এতে গাছের কিছু শিকড় কেটে গেছে। গাছটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই সেটি কেটে ফেলার জন্য তাঁরা সড়ক বিভাগে আবেদন করেছেন।

তবে রাস্তার কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রোকেয়া কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মো. মুকুল বলেন, প্রেমতলী বাজারের ওই দুই গাছের স্থানে তাঁদের কোনো কাজ নেই। তারা শুধু রাস্তার দুই পাশে তিন ফুট করে ছয় ফুট সম্প্রসারণ করছেন। তাঁরা গাছের শিকড় কাটেননি। গাছের গোড়ার গোলচত্বর থেকে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ কে করেছে, সেটি জানেন না বলেও জানান এই ঠিকাদার।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন নয়ন বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে যখন সবার সই নেওয়া হয়, তখন তাঁরও সই নেওয়া হয়। তবে এই গাছ কেউ কাটতে পারবে না।

সওজের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হাকিম বলেন, গাছ কাটার আবেদনের বিষয়টি তিনি দেখেননি। এখন পর্যন্ত প্রেমতলীর গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়নি।

উল্লেখ্য, প্রেমতলী বাজারের স্থানটি নানা কারণে ঐতিহাসিক। বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক শ্রী চৈতন্যদেব ধর্ম প্রচারের জন্য পূর্ববঙ্গ থেকে গঙ্গা পার হয়ে এই প্রেমতলীতে স্নান সেরে গৌড় গমন করেন। চৈতন্যদেবের শিষ্য শ্রী গোদা পরে বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারে এ এলাকায় এসে প্রতি পূর্ণিমা তিথিতে স্নানে যেতেন প্রেমতলীর তমালতলার ঘাটে। প্রেমতলীর পাশেই খেতের গ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেশের সবচেয়ে বড় ধাম ‘খেতুরীধাম’ অবস্থিত।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ