নীলফামারী ও ডোমার রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিটের জন্য ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। স্টেশন দুটিতে এখনো টিকিট বিক্রির আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগেনি। ফলে যাত্রীদের সংগ্রহ করতে হচ্ছে সেই পুরোনো আমলের ছাপানো টিকিট।
জানা গেছে, নীলফামারী স্টেশন থেকে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী রেলপথে একটি বেসরকারিসহ মোট ছয়টি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনে নীলফামারী স্টেশন থেকে প্রতিদিন প্রায় হাজার খানেক যাত্রীকে ট্রেনের টিকিট দিতে হয়। জেলার সৈয়দপুর ও চিলাহাটি স্টেশনে আধুনিক ‘কম্পিউটার সিস্টেম’ স্থাপন করে যাত্রীরা ডিজিটাল সেবা দেওয়া হলেও নীলফামারী ও ডোমার স্টেশনে এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।
নীলফামারী রেলস্টেশন মাস্টার ওবাইদুল ইসলাম রতন আজকের পত্রিকাকে জানান, হাতে লেখা টিকিটে (বিপিটি) লিখতে গিয়ে সময় লাগছে। যেখানে অনলাইনে এক টিকিটে একাধিক যাত্রীর আসনসংখ্যা দেওয়া সম্ভব। কিন্তু হাতে লেখা একটি টিকিটে একজন যাত্রীই পাবেন। এতে টিকিট সংগ্রহ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে কাউন্টারের সামনে। হাতে লেখা টিকিটের ক্ষেত্রে অসাবধানতায় অনেক সময় একই আসন নম্বরের একাধিক যাত্রীকে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
তিনি আরও বলেন, প্রায় দুই মাস থেকে ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের ছাপানো টিকিট শেষ হয়েছে। এ কারণে টাকা প্রাপ্তির রসিদের মাধ্যমে সেবা দিতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে সময় ক্ষেপণের পাশাপাশি নানা ভুলভ্রান্তির ঘটনা ঘটছে অহরহ। প্রায় আড়াই মাস আগে টিকিটের চাহিদাপত্র দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষের কাছে। সেটি সময়ের মধ্যে সরবরাহ না পাওয়ায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
নীলফামারী শহরের সবুজপাড়ার আনোয়ার হোসেন জানান, গত শনিবার আন্তনগর নীলসাগর ট্রেনের এসি চেয়ার আসনের তিনটি টিকিট কাউন্টার থেকে নিয়েছেন। তাকে ছাপানো টিকিটের বদলে হাতে লেখা রসিদ টিকিট হিসেবে দেওয়া হয়। রসিদে তিনজনের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ২১২ টাকা কম উল্লেখ করা হয়েছে। কর্তব্যরত বুকিং সহকারী চাপের মধ্যে লিখতে ভুল হয়েছে তাই বাড়তি টাকা পরিশোধ করেন তিনি।
পৌর মার্কেটের ব্যবসায়ী আকতার হোসেন স্বপন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নীলফামারীর চিলাহাটি ও সৈয়দপুরসহ দেশের অধিকাংশ রেলস্টেশনে কম্পিউটারের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট দেওয়া হয়। কিন্তু জেলা শহরের প্রধান স্টেশনে সেই ব্যবস্থা নেই। এ স্টেশনে যাত্রীদের কখনো হাতে লেখা, আবার কখনো ছাপানো টিকিট সরবরাহ করা হয়। হাতে লেখা টিকিটের যে কার্বন কপি আমাদের সরবরাহ করা হয়, সেটি নিয়ে বেশির ভাগ সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। কার্বন কপির ওই টিকিটের অনেক স্থানে লেখা স্পষ্ট উঠে না। এ ছাড়া এক টিকিটের আসন দুবার বিক্রি করার ঘটনাও রয়েছে।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার আজকের পত্রিকাকে জানান, নীলফামারী স্টেশনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।