গ্রামবাংলার লোকায়ত ঐতিহ্যের নানা শিল্পকর্মের পসরা বসেছে মেলায়। চিত্রকর্ম, নকশা, ঐতিহাসিক চরিত্রের ডিজিটাল ফটো, চারুকলাবিষয়ক গ্রন্থ ও কারুপণ্য—কিছুই যেন বাদ রাখেননি চারুকলার শিক্ষার্থীরা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিল্পীরাও নানা পণ্যে স্টল সাজিয়েছেন। এসব নিয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘জয়নুল উৎসব’।
বুধবার সকালে অনুষদের বকুলতলায় উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এর আগে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সবাই। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ১০৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মেলার আয়োজন করেছে চারুকলা অনুষদ। আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় শেষ হবে মেলার আয়োজন। ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রমণ শিব কুমার এবং ঢাবির শিক্ষক অধ্যাপক আব্দুস শাকুর শাহকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জয়নুল সম্মাননা দেওয়া হয়। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতরঞ্জি, নকশিকাঁথা, শীতলপাটি, শখের হাঁড়ি, মাটি ও কাঠের পুতুল, কোমর তাঁতের কাপড়, বাঁশি, পাখা, শোলা, শঙ্খ, পটশিল্পসহ নানা পণ্য নিয়ে এসে স্টলে বসেছেন বিক্রেতারা।
চিত্রশিল্পী আলভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতিকে বুঝতে এবং ধর্মান্ধতা ও গোঁড়ামির বিরুদ্ধে এমন উৎসব তরুণ প্রজন্মকে পথ দেখাবে। বাঙালি তার ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতিকে ধারণ করে এগিয়ে যাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
চারুকলা শিক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ১৯৪৮ সালে ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশে আধুনিক শিল্প আন্দোলনের পুরোধা জয়নুল আবেদিন। পরে তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদে উন্নীত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি এ প্রতিষ্ঠান শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতীয় উপমহাদেশে চারুকলা শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।’
১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের কেন্দুয়ায় জয়নুল আবেদিনের জন্ম।