আলভী নাকি মিলন? কে এই ২১ বছর বয়সী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবক? দুই পরিবার দাবি করছে, ওই প্রতিবন্ধী যুবক তাঁদের পরিবারের সন্তান। এ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সালিস। কিন্তু হয়নি সমাধান। অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো, করা হবে ডিএনএ টেস্ট। এরপর ওই যুবক ফিরে যাবে আপন ঠিকানায়। এমন ঘটনায় ঘটেছে নান্দাইলের শেরপুর ইউনিয়নের হাসেনপুর গ্রামে।
ওই যুবকের বর্তমান পরিচয় হাসেনপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তাঁদের দাবি, ঢাকায় মিলন নামে তাঁদের ছেলে হারিয়ে যায়। আট মাস পর হাতিরঝিল এলাকা থেকে মিলনকে খুঁজে পান। এর কয়েক বছর পর গ্রামে চলে আসেন।
অপরদিকে হারানোর পাঁচ বছর পর ওই যুবককে নিজের পরিবারের সদস্য দাবি করছেন নারায়ণগঞ্জের তারাবো পৌরসভার দক্ষিণ রুপসী এলাকার কাজী অরুণের পরিবার। তাঁদের দাবি, ওই যুবক মিলন নয়, কাজী আলভী।
জানা গেছে, মিলন হাসেনপুর গ্রামে বসবাস করার সময় লংগারপাড় ও পাঁচরুখি বাজারে নিয়মিত চলাচল করেন। সেই সুবাদে মাইক্রোবাস মালিক সোহাগ মিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো হওয়ায় মিলনকে নিয়ে টিকটক ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করেন তিনি। সেই ভিডিও দেখে মিলনকে নিজেদের সন্তান হিসেবে চিহ্নিত করে তারাবোর ওই পরিবার।
পরে ওই ভিডিওর সূত্র ধরে গত মঙ্গলবার ছেলেকে ফিরিয়ে নিতে আসে কাজী অরুণের পরিবার। এ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সালিস করেও কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। পরে সিদ্ধান্ত হয় ডিএনএ টেস্ট করানোর।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা কাজী আক্তার হোসেন বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ছেলেটি আমার ভাতিজা। জন্মসূত্রে নাম কাজী আলভী। বাবার নাম কাজী অরুণ। জন্মের পরে তাঁর প্রস্রাব-পায়খানা হতো না। পরে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে পায়খানার রাস্তা তৈরি করতে হয়েছে। সে কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর মতো বড় হতে থাকে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে বাসা থেকে সবার অজান্তেই বের হয়ে যায় সে। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা পান্থপথে থাকা অবস্থায় ছোট ছেলে মিলন হারিয়ে যায়। আট মাস পর হাতিরঝিলে খুঁজে পাই। ডিএনএ টেস্টে যদি প্রমাণিত হয় সন্তান তাঁদের, তাহলে নিয়ে যাবে।’
চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া মিল্টন বলেন, ‘মনে হচ্ছে, ছেলেটি নারায়ণগঞ্জের। তবে বর্তমান পরিবার মানতে রাজি না হওয়ায় ডিএনএ টেস্টের পরামর্শ দিয়েছি।’
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দেখার জন্য বলেছি। যদি সমাধান না হয়’ তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’