গত শতকের পঞ্চাশের দশক। যশোর শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে জামতলা নামের একটি ছোট্ট বাজারে চায়ের দোকান চালাতেন শেখ সাদেক আলী। গোয়ালারা প্রতিদিন চায়ের জন্য দুধ দিয়ে যেতেন তাঁকে। একদিন দুধের পরিমাণ বেশি হলে সাদেক দুধ কিনতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় দোকানে চা খেতে আসা কুমিল্লার এক ব্যক্তির পরামর্শে তিনি দুধ রেখে দেন। লোকটি সাদেক মিয়াকে রসগোল্লা তৈরির কৌশল শিখিয়ে দেন। তখন থেকে চায়ের দোকানে সাদেক আলী রসগোল্লাও রাখতে শুরু করেন। এর পর তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তাঁর নামে এ রসগোল্লা সাদেক গোল্লা হিসেবে পরিচিতি পায়। সেই ১৯৫৫ থেকে ১৯৯৯ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি নিজ হাতে মিষ্টি তৈরি করে এর সুনাম অক্ষুণ্ন রেখেছেন। এখন তাঁর ছয় ছেলেসহ জামতলা ও এর আশপাশের এলাকায় ৮ থেকে ১০টি দোকানে এ মিষ্টি তৈরি হয়ে জামতলার রসগোল্লা নামে বিক্রি হয়।
ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষেরা এখন এই মিষ্টির নাম জানেন। কেউ কেউ স্বাদেও চেনেন। দেশি গরুর দুধ, চিনি আর জ্বালানি হিসেবে তেঁতুল, বাবলা ও বেল কাঠের ব্যবহার এ মিষ্টির স্বাদকে করেছে বৈচিত্র্যপূর্ণ। সাদেক আলীর ছয় ছেলে আলমগীর, আনোয়ার হোসেন, শাহিনুর, শাহজাহান, জাহাঙ্গীর ও নূরুজ্জামান এখন এ সুস্বাদু মিষ্টি ব্যবসার হাল ধরেন।
দরদাম
সময়ের বদলে সাদেক গোল্লা কর্তৃপক্ষ ২০ পিস, ১০ পিস, ৫ পিসের প্যাকেটে মিষ্টি সরবরাহ করে থাকে। এগুলোর দাম যথাক্রমে প্রতি পিস ৫ টাকা, ১০ টাকা ও ২০ টাকা। এ ছাড়া ২০ পিসের বিশেষ সাদা মিষ্টির দাম ১২০ টাকা।
মৃত সাদেক মিয়ার ছেলে শাহিনুর রহমান আদি জামতলার ‘সাদেক মিষ্টান্ন ভান্ডার’ পরিচালনা করছেন। তিনি জানান, জামতলা ও নাভারন ছাড়া তাঁদের কোথাও কোনো শাখা নেই। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় জামতলার মিষ্টি সরবরাহ করে থাকেন তাঁরা।