যৌতুক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। ইসলামি শরিয়তে যৌতুকের কোনো স্থান নেই। কন্যাপক্ষ থেকে জোর করে কোনো কিছু আদায় করা ইসলামে হারাম। বরং ইসলামে বিয়ের বিনিময়ে কন্যার জন্য দেনমোহর আদায় করার কথাই বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা নারীদের মোহরানা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আদায় করবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৪) তা ছাড়া বাংলাদেশের আইন অনুযায়ীও যৌতুকের আদান-প্রদান শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
যৌতুক নিপীড়নমূলক সামাজিক প্রথা। এখানে কনেপক্ষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অন্যায়ভাবে তার পরিবার থেকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা আদায় করা হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি জঘন্যতম জুলুম। কারণ আল্লাহ তাআলা কাউকে জুলুম করে সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘এবং অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভক্ষণ কোরো না।’ (সুরা বাকারা: ১৮৮) তা ছাড়া বিয়ে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি। বিয়ের ক্ষেত্রে বর কনেকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণের বিনিময়ে মোহরানা দেবেন—এটিই ইসলামের বিধান। এই চুক্তির সঙ্গে কন্যাপক্ষ থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধা লাভের শর্ত করা ইসলামে অনুমোদিত নয়।
অবশ্য কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা ছাড়া কন্যাপক্ষ খুশি হয়ে কিছু দিলে তা উপহার হিসেবে গণ্য হবে। মহানবী (স.) তাঁর মেয়ে ফাতেমার বিয়েতে একটি পশমের সাদা চাদর, একটি ইজখির ঘাসের বালিশ এবং চামড়ার পানির মশক দিয়েছিলেন। অন্য বর্ণনায় একটি জাঁতার কথাও এসেছে। (আবু দাউদ) হজরত ওমর (রা.) বলেন, ‘হে মুসলমানেরা, তোমরা বিয়েতে মোটা অঙ্কের মোহর, আড়ম্বরতা ও যৌতুক দাবি কোরো না। কেননা, আল্লাহর কাছে এটার কোনো মর্যাদা বা মূল্য নেই। যদি থাকত, তাহলে রাসুল (স.) তাঁর কন্যা ফাতেমা (রা.)-এর বিয়েতে করতেন।’ (তিরমিজি)