মাঘের শেষের দিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। বিশেষ করে আলু ও সরিষাচাষিরা। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরেছে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। সঙ্গে দমকা হাওয়ায় বেড়েছে ঠান্ডা। এতে তলিয়ে গেছে আলুখেত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গম, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসল। উৎপাদন নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন চাষি। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
কৃষকেরা বলছেন, কয়েক বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এতে আলুসহ সরিষার উৎপাদনের পরিমাণ ও মান দুটোই কমবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার এ উপজেলায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা, ১০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে গম ও ৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে।
দিনমজুর অতুল বলেন, সরিষাখেতে বৃষ্টির পানি জমে আছে। তাই কাজ বন্ধ।
উপজেলার মিত্রবাটি এলাকার নুরুল বলেন, দুই বিঘা জমিতে আলু আবাদ করেছেন তিনি। শুক্রবার সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়ায় আলুগাছ নুইয়ে গেছে।
মাঘের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত একই এলাকার কৃষক হিরোল বলেন, তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন তিনি। অসময়ের বৃষ্টিতে তাঁর সব শেষ হয়ে গেল।
বাঁশগাড়া গ্রামের খাদেমুল মিয়া বলেন, ঋণ নিয়ে চার বিঘা জমিতে তিনি গম চাষ করেছেন। বৃষ্টিতে গমের বেশ ক্ষতি হয়েছে। গম তুলে ঋণের টাকা পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান বলেন, এখানে জমিতে কাজ করার লোক পাওয়া যায় না। এ জন্য আবাদে খরচ বেশি হয়। বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে তাঁর সরিষাখেত নুইয়ে পড়েছে। এখন উৎপাদন নিয়ে চিন্তায় আছেন তিনি।
বৃষ্টিপাতে ফসলের ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, চলতি মৌসুমে ৩৬০ হেক্টর জমির সরিষা, ৪২০ হেক্টর জমির গম এবং ২০ হেক্টর জমির আলু ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই বৃষ্টিপাত আলু ও সরিষার জন্য ক্ষতিকর। এসব ফসল সংগ্রহে অন্তত ১৫ দিন দেরি হবে। এতে বোরো আবাদও পিছিয়ে পড়বে। তবে বোরো আবাদের জন্য বৃষ্টি ভালো। ধানগাছ দ্রুত বাড়বে। কৃষকদের আলুখেতে পানি না শুকানো পর্যন্ত আলু তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে। বন্ধ রাখতে হবে সার-কীটনাশক প্রয়োগ।