বিয়ানীবাজারে খাদ্যের সন্ধানে হাজারো বানর এখন লোকালয়ে। এরা দল বেঁধে হানা দিচ্ছে ফসলের খেতে। এ ছাড়া পথচারীদের ওপরও হামলা করছে। উপদ্রবে অতিষ্ঠ হলেও অনেকেই খাদ্য দিচ্ছেন বানর গুলোক।
বিয়ানীবাজার পৌরশহর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরের গ্রাম খাসা। এ গ্রামের ঝোপ-জঙ্গলে বহু বছর ধরে হাজারেরও বেশি বানর বাস করছে। এ গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির ঘরের চালে, গাছের নিচে কিংবা গাছের ওপরে এ সব বানর দল বেঁধে বসে থাকে। পথচারীরা কেউ কিছু দিলেই দল বেঁধে এসে খেতে শুরু করে। করোনায় মানুষের আসা-যাওয়া কম হওয়ায় দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট। তাই খাবারের খোঁজে ঝোপ-জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে উপদ্রব করছে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বানরগুলোর সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নিবিড়। মাঝে মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাত ধরে হাঁটতেও দেখা যায় বানরগুলোকে। কথিত আছে, বহু বছর আগে এখানকার ভূমি অফিসের তহসিলদার একটি পুরুষ বানর পুষতেন। বদলি হয়ে তিনি চলে গেলেও রেখে যান বানরটি। পরে অপর এক তহসিলদার আরেকটি স্ত্রী বানর এনে দুটিকেই জঙ্গলে ছেড়ে দেন। সেই থেকে বাড়তে থাকে বানরের সংখ্যা।
খাসা গ্রামের জামিল আহমদ বলেন, ‘আমাদের গ্রামে প্রাচীনকাল থেকেই বানরের বসবাস। এগুলো এখানের বনজঙ্গলের প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বেঁচে আছে। বানরগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের বাগানের আম, কাঁঠাল, লিচু, ফলমূল, কলা ও শাকসবজি খেয়ে ফেলছে। কেউ মারতে গেলে জোটবদ্ধ হয়ে তারা গাছের ডালপালা নিয়ে তেড়ে আসে। এমনকি ঘরে প্রবেশ করে মালপত্র নিয়ে যায়। এত অত্যাচার সহ্য করেও এলাকাবাসী আগলে রেখেছেন প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক এসব বানর।’
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, ‘সরকারিভাবে বানরের খাবারের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার কিছু নেই। তবে স্থানীয়ভাবে বানরের খাবারের ব্যবস্থা করা যায় কি না, সে চেষ্টা করব।’