নওগাঁর আত্রাইয়ে এবার দেশি মাছের তীব্র সংকট দেখা গেছে। এ কারণে শুঁটকি তৈরির ভরা মৌসুমেও মাছের দেখা মিলছে না। এতে শুঁটকিপল্লিতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা ও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, শুঁটকি উৎপাদনে আত্রাই প্রসিদ্ধ। দেশের ১৫-২০ জেলাতে বাজারজাত হয় এখানকার শুঁটকি। আর এই শুঁটকি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন এ অঞ্চলের তিন শতাধিক পরিবার।
সরেজমিনে উপজেলার ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের শুঁটকিপল্লিতে গিয়ে দেখা গেছে, এবার দেশি মাছের তীব্র সংকটের কারণে শুঁটকি তৈরির মৌসুমেও সেখানে মাছের দেখা নেই। রোদে মাছ শুকানোর মাচা ও চাতাল তৈরি করা হলেও সেগুলো মাছশূন্য হয়ে পড়ে আছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আত্রাইয়ে বর্ষা মৌসুমে তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় নদী ও খাল-বিলে তেমন মাছ জন্ম নেয়নি। এ ছাড়া পানি আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় দেখা মিলছে না দেশি মাছের। হাটগুলোতে মাছের সরবরাহ একেবারেই কম, যা শুঁটকি তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে শুঁটকি ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
ব্যবসায়ীরা জানান, এই এলাকার অন্তত এক শ জন মানুষ এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। শুঁটকি তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করেন তাঁরা। এটিই তাঁদের উপার্জনের একমাত্র পথ। এবার দেশি প্রজাতির মাছের সংকট রয়েছে। এ জন্য দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা। বাজারে মাছ পাওয়া গেলেও অতিরিক্ত দাম এবং পরিমাণে অল্প হওয়ায় সেগুলো দিয়ে ব্যবসা চলে না। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
ভরতেঁতুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মনজুর মোল্লা বলেন, ‘শুঁটকি ব্যবসার সঙ্গে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত। মাছসংকটে এবার অবস্থা খুবই খারাপ। মনে হচ্ছে এ ব্যবসা আর চালাতে পারব না।’
উসমান শেখ নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, পুঁটি, চান্দা, রাইখর, সাটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের শুঁটকি তৈরি করা হয়। এর মধ্যে পুঁটি ও সাটি মাছের শুঁটকির চাহিদা ভালো। তবে এবার মাছের সরবরাহ কম থাকায় এখনো উৎপাদন শুরুই করতে পারেননি তিনি।
শুঁটকি ব্যবসায়ী মোজাহার মোল্লা বলেন, অল্প কিছু মাছ পাওয়া গেলেও দাম বেশি। শুঁটকি তৈরির সাজসজ্জা বানানো হলেও মাছের অভাবে সেগুলো পড়ে আছে।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিমুল ইসলাম বলেন, মাছের কোনো সংকট নেই। তবে বর্ষা কম হওয়ায় দেশি প্রজাতির মাছ অল্প পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য শুঁটকি ব্যবসায়ীদের কিছুটা সমস্যা হতে পারে।