কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসক ও নার্স সংকট রয়েছে। এ কারণে চিকিৎসাসেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালটি ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ৫০ শয্যার ক্যাটাগরি অনুযায়ী এখানে চিকিৎসকসহ অন্যান্য সুবিধা নেই। বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা। কোনো কোনো চিকিৎসক সদর হাসপাতালে প্রেষণে চাকরি করেন। চিকিৎসকেরা প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন অজুহাতে বদলি হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, জুনিয়র কনসালট্যান্ট ৯, মেডিকেল অফিসার ২, সহকারী সার্জন ৩জন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ১জন, ৮টি ইউনিয়নে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ১জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ৩জন, পরিসংখ্যানবিদ ১জন, স্টোরকিপার ১জন, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ২জন, যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ সহকারী ১জন, জুনিয়র মেকানিক ১জন, টিকিট ক্লার্ক(আউট সোর্সিং) ১জন, টি বয় ও ওটি অ্যাটেনডেন্ট ১জন, এমএলএসএস ২, আয়া ১, নিরাপত্তা প্রহরী ১, কুক ২, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ৩, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২, স্বাস্থ্য সহকারী ১৫, সিএইচসিপি ৩ জনের পদ দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পড়ে আছে।
হাসপাতালে পরিসংখ্যান অনুযায়ী,বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ জন এবং আন্তবিভাগীয় প্রায় ৮০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়ে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসক ও নার্সের বেশির ভাগ পদ শূন্য থাকায় বিপুলসংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসক ও নার্সদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। মানসম্মত অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থাকলেও লোকবলের অভাবে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকায় জরুরি প্রসূতি সেবা চালু করা যাচ্ছে না। ফলে এখানে নানা স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কোনো প্রসূতি মা সন্তান জন্ম দিতে পারছেন না। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি দীর্ঘ দিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। রাতে যখন বিদ্যুৎ থাকে না তখন অন্ধকারে হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকলেও গরমের দিনে চালানো হয় না জেনারেটর।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা চিন্ময় হাওলাদার বলেন, ‘চিকিৎসক সংকটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে। কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে। ফলে হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা যাচ্ছে না।’