ফেরেশতা ফারসি শব্দ। আরবিতে বলা হয় মালাক। বহুবচন মালাইকা। মালাইকা ফেরেশতার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ইমানের মৌলিক বিষয়। একজন মুমিনকে যেসব বিষয়ে আবশ্যকরূপে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়, তার মধ্যে এটি অন্যতম।
ইসলামের পরিভাষায় ফেরেশতা হলো, আলোর তৈরি সূক্ষ্ম দেহবিশিষ্ট সৃষ্টি, যাঁদের ভালো কাজে অভ্যস্ত করেই তৈরি করা হয়েছে।ফেরেশতার বৈশিষ্ট্য হলো—তাঁরা আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে থাকেন; কখনো তাঁর অবাধ্য হন না। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হচ্ছে, ‘তারা আল্লাহর ইবাদত থেকে অহংকারবশত বিমুখ হয় না এবং তারা ক্লান্তও হয় না।’ (সুরা আম্বিয়া: ২৬)
ফেরেশতাদের মধ্যে বর্ণ ও লিঙ্গগত পার্থক্য নেই। মক্কার মুশরিকরা মনে করত, ফেরেশতারা আল্লাহর কন্যা। এ দাবি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এর পক্ষে কোনো দলিল নেই। পবিত্র কোরআনে বারবার তাদের এ মিথ্যা দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। (শরহুল আকায়িদ)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘রাসুল তাঁর রবের পক্ষ থেকে তার কাছে যা নাজিল করা হয়েছে, তাতে ইমান এনেছেন এবং মুমিনগণও।প্রত্যেকেই ইমান এনেছেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহ ও তাঁর রাসুলগণের প্রতি।’ (সুরা বাকারা: ২৮৫)
এ ছাড়া একাধিক আয়াতে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য হাদিসের মধ্যেও এ বিষয়টি বিবৃত হয়েছে। এটি সর্বসম্মত মুসলিম বিশ্বাস। কেউ একে অস্বীকার করে মুমিন হতে পারে না।
হজরত জিবরিল (আ.) একবার মানুষের রূপে নবীজির কাছে এসে কিছু মৌলিক বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন। নবী (সা.) সেসব প্রশ্নের বিশদ উত্তর দিলেন। সেখানে একটি প্রশ্ন ছিল—‘হে মুহাম্মদ, আমাকে ইমান সম্পর্কে বলুন।’ তিনি বললেন, ‘ইমান হলো তুমি আল্লাহ, ফেরেশতা, আল্লাহর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসুলগণ, কিয়ামত দিবস ও তাকদিরের ভালো-মন্দে বিশ্বাস স্থাপন করবে।’ (মুসলিম)
লেখক: আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক