ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে দাকোপে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের কাটা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। আবার অনেকের পাকা ধান খেতের মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ফলে ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকেরা।
কৃষকেরা জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় এ বছর ভালো ফলন আশা করেছিলেন তাঁরা। কেউ কেউ ধান কাটা শুরুও করেছিলেন। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ শতশত কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দাকোপের অধিকাংশ আমনের খেত তলিয়ে গেছে। যারা ধান কেটে শুকানোর জন্য রেখেছিল তা অনেকে সরাতে পারেনি। ফলে পানিতে তলিয়ে গেছে কাটা পাকা ধান।
অন্যদিকে যাদের ধান পেকে গিয়েছিল কিন্তু কাটা শুরু করতে পারেনি তাঁদের ধান বৃষ্টি ও বাতাসের তোড়ে কাদা মাটিতে পড়ে গেছে। ফলে যে ধান হয়েছে তার অর্ধেক ধান কাটার সময় নষ্ট হবে বলে মনে করছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দাকোপে ১৯ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় জাতের ধান ৪ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে ও উপস্থিত জাতের ধান ১৫ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে।
চালনা পৌরসভা এলাকার কৃষক শিবপদ অধিকারী বলেন, ‘এ বছর ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করছি। বীজ, সার ও শ্রমিকের দাম বেশি থাকায় খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। তবে পরবর্তীতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন বেশ ভালো হয়েছিল। কিন্তু এখন সব ধান পানির নিচে পড়ে আছে। কোনো মতে খরচের টাকা ওঠানো কষ্ট সাধ্য হয়ে দাঁড়াবে।’
বাজুয়া চাঁদপাড়ার কৃষক সুপদ মণ্ডল বলেন, ‘যাদের জমি উঁচু ও যারা আগতি ধান রোপণ করতে পেরেছে তাঁদের ধান কাটা শুরু হয়েছিল। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন অনেক ভালো। এবার বিঘা প্রতি ১৮-২০ মন করে ধান হতে পারে বলে আশা করেছিলাম। তবে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের আঘাতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এ বছর আমাদের আর দুঃখের সীমা থাকবে না।’
দাকোপ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেহেদি হাসান খান বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছিল। আমাদের অফিসারেরা সব সময় মাঠে কৃষকদের পাশে ছিল। কৃষকেরা সবেমাত্র ধান কাটা শুরু করেছিল। এরই মধ্যে জাওয়াদের কারণে হওয়া বৃষ্টিতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকেরা।’