হোম > ছাপা সংস্করণ

জ্ঞান ফেরার পর মনির দেখেন বাঁ পা নেই

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম

মো. মনির হোসেনের (২২) বাঁ পা হাঁটুর ওপর পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছে। কেটে ফেলা অংশ সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো। আরেক পা ঠিকই আছে, কিন্তু সারা জীবন পঙ্গু হয়েই বেঁচে থাকতে হবে। এখন চিকিৎসা খরচ পাচ্ছেন, সুস্থ হওয়ার পর বাকি জীবনের দায়-দায়িত্ব কে নেবে সেই শঙ্কায় তাঁর আছে পরিবার।

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন মনির হোসেন। বর্তমানে নগরের পার্ক ভিউ হাসপাতালের ১০২১ নম্বর শয্যায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখনো শঙ্কামুক্ত নন। তাঁর আরও নানা ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে কম্পিউটার ম্যান হিসেবে কাজ করতেন মনির হোসেন। বাড়ি বাঁশখালীর নাপোড়ায়। অসচ্ছল পরিবার, তার ওপর বাবা নেই। তাঁর আরেক ভাই মো. রাশেদুল ইসলাম একই মালিকের স্মার্ট গ্রুপে চাকরি করেন।

ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দেন রাশেদ। তিনি জানান, মনির হোসেন ঘটনার দিন বিস্ফোরণ থেকে ৫০০ গজ দূরে ছিলেন। বিস্ফোরণে উড়ে আসা আগুনের কুণ্ডলী বাঁ পায়ে এসে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ওই পা অসাড় হয়ে যায়। প্রায় নিস্তেজ শরীর নিয়ে আটকা পড়েন আগুনের মধ্যখানে। ওই সময় তিনি ফোন দেন বড় ভাই রাশেদকে। ঘটনা শোনার পর রাশেদ সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি ভাড়া করে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর রাশেদ দেখেন, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। রাত তখন সাড়ে ১২টা। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। তখনো মনির হোসেনের সঙ্গে রাশেদ ফোনে কথা বললে যাচ্ছিলেন। তাঁর কণ্ঠে ভেসে আসে আর্তনাদ। শুধু বলছেন, ‘ভাই, ও ভাই আমাকে বাঁচা।’

একপর্যায়ে অনেক অনুরোধের পর এক গাড়িচালককে সঙ্গে নিয়ে ডিপোতে ঢুকে পড়েন রাশেদ। খুঁজতে থাকেন ভাইকে। চারদিকে অন্ধকার, রাসায়নিকের গন্ধ। আহত মানুষের আর্তচিৎকার। সবার কাছে গিয়ে দেখছিলেন এর মধ্যে তাঁর ভাই আছেন কিনা। ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ির আলোতে রাশেদকে দেখতে পান মনির। তারপর চিৎকার, ‘ভাই আমি এখানে, এই যে!’

রাশেদ যখন তাঁর ভাইকে উদ্ধার করছিলেন, তখন তাঁর বাঁ পা আগুনে পুড়ে গেছে। রক্ত ঝরছে। দ্রুত একটি গাড়ি করে নিজেই নিয়ে যান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। সেখান থেকে অবস্থা গুরুতর হলে পার্ক ভিউতে নিয়ে যান। যখন পার্ক ভিউতে ভর্তি করা হয়, তখন তিনি নিস্তেজ।

রাশেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, চিকিৎসকেরা বলেন, ‘বাঁচাতে চাইলে আপনার ভাইয়ের পা কেটে ফেলতে হবে। আমরা সম্মতি দিই। পরদিন জ্ঞান আসার পর পায়ের এ অবস্থা দেখে কী যে কান্না! কোনোভাবেই থামাতে পারছিলাম না। শুধু বলছিল, ‘ভাই, আমি পঙ্গু হয়ে গেলাম। আমার জীবন তো শেষ।’

গত রোববার বিকেলে পার্ক ভিউতে গিয়ে দেখা যায়, বাঁ পায়ের হাঁটুর ওপর পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়েছে। তবে ডান পা ঠিক আছে। রাশেদ বলেন, ‘এখন চিকিৎসা খরচসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি। কিন্তু সারা জীবন আমার ভাইয়ের দায়িত্ব নেবে কে?’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ