পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার স্বরূপকাঠি পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়কে যত্রতত্র ইজিবাইক স্ট্যান্ড করে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করছেন ইজিবাইক চালকেরা। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দাসহ যানবাহনের যাত্রীরা।
যানজটের কারণে অপচয় হচ্ছে মানুষের মূল্যবান সময়। অনেকে সময় বাঁচানোর জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে শিকার হচ্ছেন দুর্ঘটনার। এসব থ্রিহুইলার গাড়িগুলো যাত্রীর অপেক্ষায় বাজারের যেখানে সেখানে দাঁড়াচ্ছেন। আবার যাত্রী উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁরা।
অতি দ্রুত এসব বেপরোয়া ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণের আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তাঁদের দাবি ইজিবাইকগুলো যেন নির্ধারিত স্ট্যান্ড থেকে চলাচল করে। অথবা লোক সমাগম কম জায়গায় দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। তা না হলে কোনোভাবেই পৌর শহরের যানজট নিরসন হবে না।
নেছারাবাদ উপজেলার জগৎপট্টি বন্দরের স্বরূপকাঠি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, পুরোনো হাসপাতালের সামনে, জগন্নাথকাঠি বন্দরের সুপারিপট্টি, মাছ বাজার, পুরোনো ইউনিয়ন পরিষদ, হাসপাতাল ফটক ও কাঠের পুলের সামনে বেপরোয়া ইজিবাইক এলোমেলোভাবে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তার বেশির ভাগ অংশই তাঁদের দখলে থাকে। বাজারের ভেতরে ইজিবাইকের ভোগান্তি মানুষের নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার স্বরূপকাঠি পৌর শহরের রাস্তাগুলো মোটামুটি প্রশস্ত হলেও রাস্তার দুই পাশে ইজিবাইক এলোমেলোভাবে দাঁড় করিয়ে রাখেন চালকেরা। যেখানে সেখানে ইজিবাইক ঘোরানোর কারণে রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ওই সব সড়ক দিয়ে প্রায়ই বাজারের ব্যবসায়ীদের মালামাল ওঠানামা করানো হয়। এতে রাস্তা আরও সংকুচিত হয়ে পড়ে।
উপজেলার পৌর শহরের জগৎপট্টি বন্দরের পুরোনো হাসপাতাল সামনে থেকে উত্তর জগন্নাথকাঠি বন্দরের বর্তমান হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত ইজিবাইকের কারণে যানজটের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। তবে সপ্তাহের যে কোনো দিনের চেয়ে সোম ও বৃহস্পতিবার হাটবারের দিন যানজটের মাত্রা যেন রাজধানীর যানজটকেও হার মানায়।
এ ছাড়া স্বরূপকাঠি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, থানা মোড়, বাজারের কাঠের পুলের দক্ষিণ পাড়ের মামু-ভাগিনা মোড় এবং উপজেলার স্বরূপকাঠি পাইলট স্কুল এলাকায় যত্রতত্র ইজিবাইক দাঁড়ানোয় শহরের মানুষের জীবন ক্রমেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। পথচারীরা চালকদের কোনো কিছু বললেই তাঁরা পথচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্বরূপকাঠি বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী আলম জানান, তাঁরা প্রতিদিন বাজার এবং দোকানের সামনে এলোমেলোভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখেন। এতে তাঁদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি পথচারীদের নানান সমস্যা হচ্ছে। ওদের ব্যবহারের কারণে মানসম্মানের ভয়ে কেউ কিছু বলেন না।
বাজারের সুপারি ব্যবসায়ী কার্তিক সাহা বলেন, ‘বাজারের যেখানে সেখানে এলোমেলোভাবে দাঁড়িয়ে গাড়ি স্ট্যান্ড করে রাখেন তাঁরা। এতে প্রতিদিন বাজারে আসা মানুষ নানান ভোগান্তিতে পড়েন। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় হাটের দুই দিন। ওই দুই দিন বাজারে চলাচল করাই মুশকিল হয়ে যায়। এ ছাড়া তাঁদের গাড়িতে উচ্চমাত্রার হর্ন এবং বেপরোয়া চলাচলে বিপদের মুখে থাকেন নারী, বৃদ্ধ, অসুস্থ রোগী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।
উত্তর জগন্নাথকাঠি বন্দর কমিটির সম্পাদক শামসুল আলম বাবুল বলেন, ‘ইজিবাইক চালকদের বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁরা কারও কথা শুনছেন না। এ ব্যাপারে ইউএনওকে জানানো হয়েছে। আশা করি শিগগির এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র গোলাম কবির জানান, অতি শিগগির ইজিবাইক চালকদের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। তখন আর কোনো সমস্যা থাকবে না। দ্রুত এদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।