ঋণখেলাপি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসা পাবনার ঈশ্বরদীর সেই ৩৭ কৃষক তাঁদের সুদসহ ঋণের বাকি টাকা এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজি চাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সদস্য কৃষকদের পক্ষে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত মহিলা সদস্য বিলকিস নাহার এ-সংক্রান্ত আবেদন করেছেন। বিলকিস নাহার এই সমিতির সভানেত্রীও।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড ঢাকার মতিঝিল শাখার ম্যানেজার বরাবর একটি আবেদনপত্র ব্যাংকটির পাবনা শাখায় জমা দেন। এ সময় পাবনা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক কাজী জসিম উদ্দিন তাঁর আবেদনপত্র গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে কৃষকদের পক্ষে আবেদনকারী বিলকিস নাহার বলেন, ঋণ পরিশোধ ও মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন তিনি। দ্রুত যেন এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। তাহলে কৃষকেরা হয়রানি থেকে বাঁচবেন।
পাবনা সমবায় ভূমি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক কাজী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভাড়ইমারী উত্তরপাড়া সবজি চাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভানেত্রীর আবেদনপত্রটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ই-মেইলে সমবায় ব্যাংকের ঢাকার মহাব্যবস্থাপক বরাবর পাঠিয়েছি। এখন তাঁরা এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের ৪০ জন কৃষক ওই সমিতির নামে দলগত ঋণ হিসেবে ১৬ লাখ টাকা নেন। এর মধ্যে কেউ ২৫ হাজার, কেউ ৪০ হাজার টাকা করে ঋণ পান। দীর্ঘদিনেও সেই ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ না করায় ২০২১ সালে ৩৭ জন কৃষকের নামে মামলা করে ব্যাংকটি। সম্প্রতি আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত শুক্রবার ১২ জন কৃষককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে গত রোববার পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক শামসুজ্জামান গ্রেপ্তার ১২ কৃষকসহ ৩৭ জন কৃষকের জামিন মঞ্জুর করেন।