নিয়ত হলো কোনো কিছু করার ইচ্ছা করা। শুধু আল্লাহ তাআলার জন্য ইবাদত করলে সেটা হয় ‘ইখলাস’, আর অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইবাদত করলে সেটা হয় ‘রিয়া’। যদি কেউ হজের নিয়তে ঘর ছেড়ে যায়, সে হজের সওয়াব পাবে। আর যে অন্য উদ্দেশ্যে মক্কায় সফর করে, সে সওয়াব কিছুই পাবে না। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের অন্তরে যা আছে, চাই তা প্রকাশ করো বা গোপন করো, আল্লাহ তার হিসাব নেবেন।’ (সুরা বাকারা: ২৮৪)
আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে ইবাদতকারী ব্যক্তির উদাহরণ হলো—কেউ পাথরে পূর্ণ ব্যাগ নিয়ে বাজারে গেল, তখন লোকেরা তার ব্যাগ দেখে বলল, দেখো তার ব্যাগে কত টাকা! এতে সে খুব খুশি হলো। অথচ এই পাথরভর্তি ব্যাগ দিয়ে মানুষের প্রশংসা কুড়ানো ব্যতীত সে কিছুই করতে পারবে না। একইভাবে রিয়াকারীও পরকালে আল্লাহ তাআলার কাছে কিছুই পাবে না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক থেকে খুব ভয় করছি।’ সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, ছোট শিরক কী?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তা হলো রিয়া। যেদিন আল্লাহ তাআলা বান্দাদের আমলের পুরস্কার দেবেন, সেদিন রিয়াকারদের বলবেন, যাও, দুনিয়াতে যাদের দেখানোর জন্য ইবাদত করতে, তাদের কাছে যাও। দেখো তাদের কাছে কোনো পুরস্কার পাও কি না।’ (মুসনাদে আহমদ)
আমল ঠিক করার চেয়ে ইখলাস ঠিক করা বেশি কঠিন। কেননা আমল দেখা যায় এবং ঠিক না ভুল হচ্ছে সেটা নিজে না বুঝলেও অন্যরা বুঝতে পারে। কিন্তু ইখলাস দেখা যায় না এবং অন্যরা এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে পারে না। তাই এটা একান্তই প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যাপার এবং নিজেদেরই এ ব্যাপারে সাবধান হতে হবে।
লেখক: মুনীরুল ইসলাম, ইসলামবিষয়ক গবেষক