বুড়িচংয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৭ ধরনের শাকসবজি এবং ১২ ধরনের ফল চাষ করে সাড়া ফেলেছেন মো. ফেরদৌস নামের এক কৃষক। উপজেলার অরাগ-আনন্দপুর গ্রামের নিজ বাড়ির আঙিনায় আট শতাংশ জমিতে এ চাষাবাদ করেছেন তিনি।
মো. ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিজের ইচ্ছা আর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদ শুরু করেন তিনি। এ বাগানে তিনি কোকো পিট দিয়ে ট্রেতে চারা তৈরি, গ্রাফটিং করে টমেটো চাষ, মালচিং পেপার বিছিয়ে শসা চাষ করেছেন। বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ফল ছাড়াও তাঁর বাগানে রয়েছে ড্রাগন ফল। এসবের পাশাপাশি তাঁর বাগানের চারপাশে রয়েছে হরেক রকমের সৌন্দর্য বর্ধনকারী ফুল। আর এসব চাষে তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ধরনের কম্পোস্ট সার।
বাগানে গেলে দেখা যায়, বিক্রির জন্য শসা সংগ্রহ করছেন ফেরদৌস। জানান এই মৌসুমে ১০ হাজার টাকার শসা বিক্রি করেছেন তিনি। প্রতি কেজি শসা ৪০ টাকা দরে বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে বাজারে শসার খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ২০ টাকা হলেও তাঁর কাছ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ২০ টাকা কেজি দরে শসা কিনে নিয়ে যান। একই জমিতে রবি মৌসুমে টমেটো চাষ করে আয় করেছেন ২৫ হাজার টাকা। বাগানের ৫টি বারোমাসি কাগজি লেবুর গাছ থেকে বছরে আয় হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। কীটনাশকমুক্ত হওয়ায় পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীদের কাছে এর চাহিদা খুব বেশি।
ফেরদৌস বলেন, ‘গতানুগতিক ধারায় কৃষিকাজ না করে সব সময় আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করি। যে কোনো প্রয়োজনে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বানিন রায়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিই। তা ছাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়মিত আমার বাগানে আসেন। বাগানে ২০ শতাংশ নতুন জমি যুক্ত করেছি, এখানে পেঁপে ও কলা চাষ করব। আর শসা উঠে গেলে এ অংশে গ্রীষ্মকালীন টমেটো লাগাব।’
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বানিন রায় বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে ফেরদৌস একজন অনুকরণীয় ও প্রগতিশীল কৃষক। দেড় বছর বছর আগে ট্রাইকো কম্পোস্ট তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে পরিচিত হই। শতভাগ সম্ভব না হলেও তিনি সব সময় জৈব কৃষি বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। উৎপাদিত পণ্য শতভাগ নিরাপদ রাখতে তিনি সমর্থ হয়েছেন।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. আফরিনা আক্তার জানান, ‘ফেরদৌসের বাগানটি পরিদর্শন করে বেশ ভালো লেগেছে। তাঁর মতো আগ্রহী ও উদ্যমী কৃষক প্রতিটি ঘরে ঘরে কাম্য। বুড়িচংয়ের কৃষকদের হাতে আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি পৌঁছে দিতে আমরা চেষ্টা করছি।’