ভালুকায় কৃষকের ঘরে ঘরে এখন নবান্ন উৎসব। মাঠে সোনালি রঙের পাকা ধানে ভরপুর, চারদিকে চলছে ধান কাটার মহোৎসব। কৃষকের উঠানে সোনা রাঙা ধানে শোভা পাচ্ছে। তবে এবার আমনের ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, আমন কাটতে মাঠে শ্রমিক, আর বাড়িতে আর ধান মাড়াইয়ে ব্যস্ত গৃহস্থ। খেতে কেউ ধান কাটছেন, আবার কেউ আঁটি বাঁধছেন। আবার কেউ ধানের আঁটি মাথায় নিয়ে গিয়ে উঠানে রাখছেন। বাড়িতে ধান মাড়াই করে শুকিয়ে নিচ্ছেন কৃষাণীরা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। তাঁদের মুখে ফুটেছে তৃপ্তির হাসি। তবে এবার বাজারে ধানের দাম তুলনামূলক কম। সে কারণে হিসাব কষে এবার লাভের কথা বলছেন তাঁরা।
উপজেলার হবিরবাড়ী গ্রামের কৃষক রমজান আলী বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। পাশাপাশি ধানের বাজারও চাঙা। সে হিসেবে লোকসান হওয়ার শঙ্কা নেই বলেই জানান তিনি।
এদিকে গ্রামে গ্রামে এখন নবান্নের আনন্দ। নতুন ধান ঘরে তুলতে কৃষাণ-কৃষাণীরা দম ফেলার সময় নেই। এই ধান বেঁচে ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীর জন্য শীতের কাপড় কিনবেন, এমন কথাও বলছেন অনেকেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধানের দাম কিছুটা কম থাকলেও চালের বাজার চড়া। এজন্য দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গত বছরের মতো এবার আর লোকসানের আশঙ্কা নেই।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, এ বছর ব্রি-৪৯, ব্রি-৫১ ও ‘রনজিত’ আগেভাগে পেকেছে। অন্য জাতের ধান পাকতে আরও সপ্তাহ খানিক সময় লাগবে। এ বছর একর প্রতি ফলন হয়েছে ৫০-৫৫ মন। সরকার নির্বারিত বাজার মূল্য প্রতি মন ধান ১ হাজার ৮০ টাকা। তবে বিভিন্ন কারণে এলাকায় ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায় ধান বিক্রি করছেন অনেকে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বুলবুল আহাম্মদ বলেন, সরকার সঠিক সময়ে ধানের বাজার মূল্য ঘোষণা করেছে। আমরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করব। এতে কৃষকেরা ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে।