শখের বশেই মানুষ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যান। ঘোরেন বাসে, ট্রেনে, রিকশায়। কিন্তু সাদেক আলী সরদার ও তাঁর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বেছে নিলেন ঘোরার ভিন্ন পন্থা। তাঁরা গাইবান্ধা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার উদ্দেশে ১৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন।
গত মঙ্গলবার ফজরের নামাজ পড়ে গাইবান্ধা থেকে হাতীবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দেন বাবা-ছেলে। ৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে লালমনিরহাটে এসে পৌঁছান ওই দিন রাত ১০টায়। এরপর গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তাঁরা হাতীবান্ধায় পৌঁছান, সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বাসে করে তাঁরা নিজেদের বাড়ি গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
সাদেক আলী সরদার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন। তাঁর বাড়ি গাইবান্ধার সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে।
সাদেক ও ছেলে মোস্তাফিজ ইতিমধ্যে এক হাজার কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেছেন। শখ এবং শরীর চর্চা করা তাঁদের হাঁটার উদ্দেশ্য। এর আগে ৩৫ বার পায়ে হেঁটে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছেন তাঁরা। এটি তাদের ৩৬ তম অভিযাত্রা। পরবর্তীতে তাঁদের সফর পঞ্চগড়, সিলেট ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে।
সাদেক আলী সরদার বলেন, ‘আমি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, পথ চলতে ভয় করি না। আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে ব্যবসা করে। ছোট ছেলেও সেনাবাহিনীতে অফিসার ও মেয়ে হাইস্কুলে চাকরি করে। আমি ৩৩ বছর চাকরি করে বাড়িতে এসে বসে-বসে সময় কাটাতে ভালো লাগে না। বসে থাকার কারণে শরীরও যেন অকেজো হয়ে পড়ছে। শরীর ঠিক রাখতে প্রথমে গাইবান্ধা জেলার সকল উপজেলা ও ইউনিয়নে একা একা হাঁটতে শুরু করি। সকালে বাসা থেকে ছেলেসহ বের হয়েছি।’
ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাবার প্রতি ভালোবাসাটাই এখানে কাজ করেছে আমার, উনাকে আমি আমার বন্ধুর মতো দেখি। ছোট বেলা থেকে বাবার সঙ্গে বন্ধুর মতো চলি। বাবার বয়স হয়ে গেছে, তাই তাঁকে একলা ছাড়তে পারি না। বাবার সঙ্গে পায়ে হেঁটে পথ চলছি, এতে আমার শরীরেরও চর্চা হচ্ছে।’
বাবার সঙ্গে মোস্তাফিজুর পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেঁটে ঘুরতে চান বলে জানান তিনি।