কুড়িগ্রামের রৌমারীতে একটি সেতু নির্মাণের দুই বছরের মধ্যে ধসে ১৭ বছর ধরে একই অবস্থায় পড়ে আছে। উপজেলার বন্দবেড় গ্রামের এই ভাঙা সেতুর জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্মাণের সময় সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাশে মাটি ভরাট করা হয়নি। সেই সঙ্গে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এটি বন্যার পানির স্রোতে দেবে যায়। ফলে দীর্ঘ দিনের ভোগান্তি শেষ হতে গিয়েও শেষ হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০০২-০৩ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ২২ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করে। নির্মাণের দুই বছরের মধ্যে ২০০৫ সালের বন্যায় এটি দেবে যায়।
বন্দবেড় গ্রামের বাসিন্দা মাহফুজ জানান, সেতুটি ধসে যাওয়ায় পথচারীদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তেমনি সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষিপণ্য নিয়ে বিপাকে আছেন চাষিরা। শুকনা মৌসুমে বিকল্প সড়ক ও পাশের ফসলের মাঠ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। আর বর্ষা মৌসুমে জনগণের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করা বাঁশের সাঁকোতে চলতে হয়।
একই গ্রামের আবুল কাসেম ও মাহমুদুল হাসান অভিযোগ করেন, সংযোগ সড়কের দুই পাশে মাটি ভরাট না করায় বন্যার স্রোতে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। এতে করে সেতুটি ধসে যায়। এ ছাড়া নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। তখন অনেকে বাধা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের কথা কানে নেননি ঠিকাদার। পরে সংযোগ সড়ক ভরাটের মাটি না পাওয়ার অজুহাতে ওই কাজ শেষ না করেই চূড়ান্ত বিল নিয়ে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গ্রামবাসী জানান, এসব অনিয়মের কারণে নির্মাণের দুই বছরের মধ্যে সেতুটি ভেঙে যায়। ফলে সরকারের টাকা খরচ হলেও তার কোনো সুফল পায়নি জনগণ। এখন তাঁদের দাবি, চলাচলের সুবিধার্থে ওই স্থানে দ্রুত টেকসই একটি সেতু নির্মাণ করা হোক।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্যার পানির প্রবল স্রোতে সেতুটির দুই পাশের মাটি সরে গেলে এটি দেবে যায়। সেখানে নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে টেন্ডার আহ্বান করা হবে।’