জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে একটি সড়ক সংস্কারে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে হাত করেই নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আক্কেলপুর-শ্রীরামপুর সড়কের পৌরসভার স্টেশন মসজিদ-সংলগ্ন থেকে উপজেলার শেষ সীমানা শ্রীরামপুর পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ করছে জয়পুরহাটের মাহবুব ট্রেডিং নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এর মধ্যে ৩৮ দশমিক ১৭ মিটার ১৫ এমএম সিল কোড আর ৬৮৩ মিটার ২৫ এমএম ডেন্স কার্পেটিংয়ের কাজ করছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নিয়ম অনুযায়ী ওই সংস্কারে নতুন ইট এনে সেখানেই ভেঙে সড়কে দিতে হবে। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন শহরের কিছু অংশে নতুন ইট এনে ফেলছেন আর গ্রামের মধ্যে ফেলছেন নিম্নমানের ইটের খোয়া। এমনটাই জানান স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন স্টেশন মসজিদ থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত সড়কের বেশ কিছু স্থানে ভেঙে গিয়েছিল। চলতি বছরে এই সড়কটি সংস্কার শুরু হয়। সড়কটির পৌরসভার মধ্যের অংশে নতুন ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। আর সোনামুখী ইউনিয়নের মধ্যে গ্রামের অংশে পুরোনো ইটের খোয়া ট্রাকে করে রাতের বেলা এনে সেগুলো সড়কের ওপরে ফেলে সংস্কার করছেন ঠিকাদারের লোকজন।
স্থানীয় রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটির পৌর শহরের মধ্যেকার কাজ খুব ভালো হচ্ছে। কিন্তু আমাদের গ্রামের দিকে কাজের মান খুব খারাপ। ঠিকাদারের লোকজন রাতে ট্রাকে করে নিম্নমানের ইটের খোয়া এনে সড়কে ফেলছেন। পরে সেগুলো সমান করে তাঁর ওপর দিয়ে বালু দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন।’
ভ্যানচালক আশরাফুল আলম বলেন, সড়কের শ্রীরামপুরের কিছু অংশ ও চক্রঘুনাথপুর এলাকার কিছু অংশে নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে সড়ক সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। আমরা ভ্যান চলাচলের সময় বিষয়টি দেখে সেখানকার লোকজনকে বললে তাঁরা বলেন কর্তৃপক্ষকে বলেই ওই কাজ করা হচ্ছে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান মিস্ত্রি আবদুল হান্নান বলেন, ‘সড়কের এসব কাজে এইরকম হয়েই থাকে। আমরা অফিসের লোকজনকে জানিয়ে ওই ইটের খোয়া ফেলছি। তাঁরা বিষয়টি জানেন।’
জয়পুরহাটের মাহবুব ট্রেডিং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপ্রাইটর মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাইরে থেকে কোনো ইটের খোয়া ভাঙা পড়েনি। রেজিং-এর ইট কিছু আমরা ভেঙে নিয়েছি, সেগুলো হলে হতে পারে। ওই এলাকায় কোনো অনিয়মের কাজ করা হয়নি।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী রকিব হাসান বলেন, সেখানে অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই। যদি নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয় তাহলে ওই ঠিকাদার সেগুলো তুলে ফেলবেন নতুবা তাঁর বিল থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম আকন্দ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না, খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’