হোম > ছাপা সংস্করণ

বিপাকে মালিক-ঠিকাদার

এম মেহেদী হাসিন, রংপুর

নির্মাণসামগ্রীর লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে রংপুরে নির্মাণাধীন ভবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিক ও ঠিকাদারেরা। দেড় মাসের ব্যবধানে অবকাঠামো নির্মাণের খরচ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।

এতে  আবাসিক ভবনের মালিকেরা পরিকল্পনা অনুযায়ী খরচ জোগাতে পারছেন না। অন্যদিকে সরকারি কাজের ঠিকাদারেরা পড়ছেন বড় ধরনের আর্থিক লোকসানের মুখে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি উপকরণের দাম বেড়েছে। গত বছর প্রতি হাজার ইটের দাম ছিল ৭ হাজার ৫০০ টাকা। তা এখন বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার টাকা। প্রতি টন রডের দাম ৫১ থেকে ৫৫ হাজার টাকা থাকলেও বর্তমানে দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা।

এ ছাড়া সিমেন্টের ৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এক ঘনফুট পাথরের দাম ১০০ থেকে ১১০ টাকার জায়গায় দাঁড়িয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের বালুর দামও ট্রাকপ্রতি বেড়েছে ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতি গ্যালন রঙে দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক তারে ৪০ শতাংশ এবং পাইপসহ অন্যান্য সামগ্রীতে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

মহানগরীর উত্তম এলাকায় ছয়তলা বাড়ির ভিত্তি দিচ্ছেন আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘গত বছরই বাড়ি করার পরিকল্পনা নেই। সে অনুযায়ী অর্থের সংস্থান করি। কিন্তু এবার ভিত্তি দিতে গিয়েই বিপাকে পড়তে হয়েছে। সব নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে। তাই পরিকল্পনা মাফিক বাড়ি তৈরি সম্ভব হচ্ছে না।’ 

ধাপ এলাকার আক্তারুজ্জামান পাঁচতলা বিশিষ্ট বাড়ির নিচতলার কাজ শেষ করেন গত বছর। এবার পরিকল্পনা ছিল আরও দুটি তলা নির্মাণ করবেন। কিন্তু সেটি আর করতে পারছেন না। তিনি জানান, নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় আপাতত একটি তলা নির্মাণ করে কাজ বন্ধ রাখতে হবে। এভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকলে তাঁর মতো অনেককেই নির্মাণকাজ স্থগিত রাখতে হবে।

রংপুরের গণপূর্ত, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কয়েকজন ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে কোনো বছরই একবারে এত পরিমাণে দাম বাড়েনি। এ বছর অনেক ঠিকাদারই বিরাট আর্থিক লোকসানে পড়তে পারেন। এমনকি অনেকের ঠিকাদারি পেশা বন্ধ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

ঠিকাদারদের অভিযোগ, একটি ক্ষমতাবান অদৃশ্য সিন্ডিকেট নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি করেছে। তাদের হাতেই নিষ্পেষিত হচ্ছে দেশের আবাসন ও নির্মাণ খাত। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম যতটুকু বাড়ে, দেশে তার পাঁচ গুণ বাড়ানো হচ্ছে বলে দাবি ঠিকাদারদের।

গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার মেসার্স কর কন্সট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শংকর কর বলেন, ‘রংপুরের রবার্টসনগঞ্জে অবস্থিত এনএসআই ভবনের সম্প্রসারণের জন্য চতুর্থ ও পঞ্চম তলার কাজ করছি। ২০২১ সালে ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার এই কাজ যখন পাই তখন নির্মাণসামগ্রীর দাম কম ছিল। কিন্তু ২০২২ সালে সেই দাম আকাশচুম্বী। এই কাজটাতেই আমার ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’

রংপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান জানান, দীর্ঘদিন পরে এ বছর নির্মাণসামগ্রীর দাম অনেকটা বেড়েছে। বর্ধিত দামের কারণে আবাসন ও নির্মাণকাজে ব্যয় প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

এ মুহূর্তে বাজার তদারকি করা খুবই জরুরি।

ঠিকাদারদের লোকসানের বিষয়ে রংপুর গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল গোফফার বলেন, ‘নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিতে ঠিকাদারেরা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে ২০১৮ এর পরে এ বছর আমরা মূল্য শিডিউল পরিবর্তন করার প্রস্তাবনা দিয়েছি। গণপূর্ত বিভাগের মূল্য বাছাই কমিটি প্রতি চার বছর পরপর এ কাজ করে থাকে। জুন নাগাদ নতুন শিডিউল পাস হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ