হোম > ছাপা সংস্করণ

সংসার চালাতে ঋণের জালে

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুর শহরের নতুনপাড়ার দেলোয়ার হোসেন কাজ করেন নরসুন্দরের। প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করেন। এসেছেন বাজার করতে। কয়েক দিন ধরে সংসার চালাতে গিয়ে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছেন না তিনি। ফলে জড়িয়ে পড়ছেন ঋণের জালে। সংসার চালাতে গিয়ে বেগ পোহাতে হচ্ছে তাঁকে। গতকাল শুক্রবার তাঁর সঙ্গে কথা হয় শহরের বড়বজারের কাঁচা বাজারে।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন তো আর সমপরিমাণ টাকা আয় করতে পারি না। কোনো সময় ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। আবার কোনো সময় ৩০০ টাকারও নিচে থাকে। কিন্তু চাল ও মুদি বাজার শেষ করে কাঁচা বাজারে এসে সবজিসহ অন্য কিছু কেনার সাধ্য থাকছে না। দুই সপ্তাহ ধরে বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এভাবে চলতে থাকলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে সামনের দিনগুলো কীভাবে পার করব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তাই আছি। পেট তো আর বসে থাকবে না।’

গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত ভোজ্য তেলের সংকট। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। দোকানে ডালের দামও অস্থিতিশীল। মসুর ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, কলাইয়ের ডাল ১২০ টাকা, মুগ ডাল ১৩৫ টাকা। আর রমজান আসার আগেই ছোলার দাম বেড়েছে কয়েক দফা। বাজারে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। তবে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম এক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে।

এদিকে, চালের দাম কয়েক দফা বাড়ার পর এখন স্থিতিশীল। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মিনিকেট চালর ও আটার দাম। কেজি প্রতি ৬০ টাকার মিনিকেট চাল এখন বিক্রি বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা কেজি দরে আর ৩০ টাকার আটা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫ টাকা করে। প্রতি কেজি মোট চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা, লাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা, আটাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৮ টাকা দরে। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম। গরিবের মাছ বলে পরিচিত ৮০ টাকর বাটা মাছ এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি, ১৪০ টাকার পাঙাশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, ১২০ টাকার তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা কেজি, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৮০ টাকায়।

আর কিছুদিন আগেও কেজিপ্রতি ব্রয়লার বাজারে বিক্রি হতো ১২০ টাকা, তা এখন দাঁড়িয়েছে ১৪০ টাকায়। ২৩০ টাকার লেয়ার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজি দরে, পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়।

এক সপ্তাহ ধরে সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। কোনো কোনো সবজির দাম কেজিতে কমেছে ১ থেকে ২ টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৫ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, রসুন ৩০ টাকা, আদা ১০০ টাকা, বেগুন ৩৫ টাকা, শিম ২০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা, গাজর ২০ টাকা, দেশি টমেটো ৫৫ টাকা।

শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লিওন বলেন, ‘আমাদের বেতন তো আর বাড়ছে না, প্রতিনিয়তই বাজারে বাড়ছে সব পণ্যের দাম। ফলে বাজার করতে এসে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। যাঁরা ছোট চাকরি করেন, তাঁদের অবস্থা আমার মতোই।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জেলা সভাপতি রফিক-উল আলম বলেন, ‘বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে বাজার করতে গিয়ে ঠকছেন ক্রেতারা। বাজার মনিটরিং বলে যে কিছু আছে, তা আমরা কিছুই দেখতে পারছি না। বাজারে পণ্য তালিকা না থাকায় দোকানগুলোতে প্রতিনিয়তই জরিমানা করা হচ্ছে অথচ হু হু করে পণ্যের দাম বাড়লেও তাতে প্রশাসনের নজরদারি নেই।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বলেন, ‘বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। কোনো ব্যবসায়ী বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ