ডিজেলের দাম বাড়ায় লঞ্চের ভাড়া দ্বিগুণ হবে—এমন গুজব উঠে যায় পুরো সদরঘাট এলাকায়। এ নিয়ে সকাল সকাল শঙ্কায় পড়ে যান যাত্রীরা। তেলের দাম বাড়ার প্রথম দিন গতকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না আসায় ভাড়া বাড়াননি লঞ্চ মালিকেরা। তবে আগের ভাড়া রাখার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন দাবি করে ক্ষোভ জানান চালক-মালিকেরা।
বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা শেষ, কীভাবে লঞ্চ চালাব বুঝতে পারছি না। শুক্রবারের মধ্যে অবশ্যই একটা সিদ্ধান্ত নেব। হয় ভাড়া বাড়াতে হবে, নইলে ডিজেলের দাম কমাতে হবে। আমরা তো আর নিজের পকেট থেকে টাকা দেব না।’
শহিদুল জানান, নিজেদের ক্ষতি হচ্ছে জেনেও যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে তাঁরা আজ ভাড়া বাড়াননি। করোনার সময় সরকার যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছিল, সেটাই ছিল বৃহস্পতিবার।
বৃহস্পতিবার সকালে বরিশালগামী যাত্রী মোহাম্মদ মিজান বলেন, আমি গত দুদিন আগে টিকিট ক্রয় করেছিলাম ১৮০০ টাকা দিয়ে। সরকার তেলের দাম বাড়িয়েছে, হয়তো এ দামে এখন আর পাব না। মানামী লঞ্চের যাত্রী শরিফ জানান, সুপারভাইজারের সঙ্গে আলাপ করেছি। আজকে তাঁরা কোনো ধরনের বাড়তি ভাড়া নেবেন না।
তেলের দাম বাড়ায় বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শাহ আলম ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, হঠাৎ করে এই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন ব্যয় বাড়বে। নৌপরিবহনসহ সব পরিবহনেই অচল অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে পুনর্বিবেচনার দাবি জানাই।
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক প্রকাশ দত্ত বলেন, সারা দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চের শ্রমিক আছে ৫০ হাজারের বেশি। এখন জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে, লঞ্চের মালিকেরা কীভাবে লাভ করবেন, আর শ্রমিকদের বেতনই বা কীভাবে দেবেন। এই সিদ্ধান্তে শ্রমিকদের জীবনে দুর্দশা নেমে আসবে।