কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। এতে বিপাকে পড়েছেন সব ধরনের ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে তেল কোম্পানিগুলোর স্থানীয় পরিবেশকেরা বলছেন, দ্রুত তেল সরবরাহ শুরু হবে। তবে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, তার অর্ধেকও সরবরাহ পাওয়া যাবে না। এতে ঘাটতি থেকেই যাবে। অন্যদিকে প্রশাসন বলছে, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে তদারকি জোরদার করা হচ্ছে। যাঁরা সরকারনির্ধারিত দামের বেশি তেল বিক্রি করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজান মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই বাজারজুড়ে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দেয়। কোম্পানি থেকে তেলের সরবরাহ না পাওয়ায় বাজারে ঘাটতি শুরু হয়। এই সুযোগে মজুত করা তেল অনেকেই বেশি দামে বিক্রি করেন। তবে ঈদের পর থেকে কোনো দোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারে ১০-২০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
পাকুন্দিয়া পৌর সদর বাজার, মির্জাপুর, মঠখোলা বাজারসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, কোনো দোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। অনেক জায়গায় খোলা সয়াবিনও পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও দাম বেশি। তেল কোম্পানি থেকে সরবরাহ না পাওয়ায় সয়াবিন তেলের এমন সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন পরিশোধিত সয়াবিন তেল (খোলা) প্রতি লিটার ১৮০ টাকা ও পরিশোধিত সয়াবিন তেল (বোতল) প্রতি লিটার ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু এখানে খোলা সয়াবিন তেল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
মোস্তফা নামের একজন ক্রেতা বলেন, ‘ঈদের আগে সয়াবিন তেল কিনছিলাম। রান্নাবান্না করে শেষ হয়ে গেছে। বাজারে তেল কিনতে এসে দেখি, বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। কোনো দোকানেই তা পাচ্ছি না।’
পৌর সদর বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন খুচরা তেল বিক্রেতা বলেন, ‘নির্ধারিত দামে তেল বিক্রিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে মহাজনদের (ডিলার) কাছ থেকে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। তাই খরচসহ প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৯০ টাকায় বিক্রি করছি।’
রুবেল মিয়া নামের একজন সবজি ব্যবসায়ী বলেন, ‘ঈদের আগে বোতলজাত সয়াবিন তেল চাহিদার তুলনায় কম পাওয়া গেলেও ঈদের পর পাওয়াই যাচ্ছে না। তেল বিক্রি করতে না পারায় অন্য মালামালও কম বিক্রি হচ্ছে। এতে লোকসান হচ্ছে।’
বসুন্ধরা তেল কোম্পানির পাকুন্দিয়া উপজেলার পরিবেশক মেহেদী হাসান শাহীন বলেন, ‘১০ রোজার পর থেকেই কোম্পানি থেকে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না। গতকাল অর্ডার নিয়েছে। তবে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, তার অর্ধেকও সরবরাহ পাওয়া যাবে না বলে জানতে পেরেছি। এতে ঘাটতি থেকেই যাবে।’
তীর কোম্পানির পরিবেশক আসাদ উল্লাহ জানান, ‘ঈদের আগের দিন আমি তেল সরবরাহ পেয়েছি। দু-এক দিনের মধ্যে আবার সরবরাহ পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, ‘ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে তদারকি জোরদার করা হচ্ছে। যাঁরা সরকারনির্ধারিত দামের অতিরিক্ত বিক্রি করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’