জীবিকার অবলম্বন হিসেবে আজও ঘানিশিল্প আঁকড়ে আছেন পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার দুই ভাই শামসুল হক ও সলিম উদ্দীন। আপন দুই ভাই বাপ-দাদার এ পেশা জীবনের শেষ বয়সে এসেও বদলাননি।
দুই ভাইয়ের বাড়ি আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের সুখ্যাতি গ্রামে। তাঁরা ৫০ বছর ধরে এই পেশা টিকিয়ে রেখেছেন।
শামসুল হক জানান, তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর অভাবের সংসারের হাল ধরতে হয় দুই ভাইকে। তখন কোনো উপায় না পেয়ে বাবার রেখে যাওয়া পেশা ঘানি বেছে নিয়েছেন।
সলিম উদ্দীন জানান, তখনকার দিনে ঘানি সরিষা তেলের চাহিদা খুব বেশি থাকায় বড় ভাই বাবার রেখে যাওয়া ঘানিটা চালাতো, আর আমি পৃথকভাবে কাঠের ঘানি স্থাপন করি। এমনকি এখনো ঘানি দুটো চলছে। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির সরিষার তেল আসায়, ঘানির খাঁটি সরিষা তেলের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে।
তাঁরা জানান, বর্তমানে চাহিদা কম থাকায় দুদিন পরপর ২০ কেজি সরিষার ঘানি টানা হয়। ২০ কেজি সরিষার দাম ১ হাজার ৬০০ টাকা। ২০ কেজি সরিষা থেকে ৬ কেজি তেল আসে। প্রতি কেজি খাঁটি সরিষার তেল ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেন। তেলের পাশাপাশি ২০ কেজি সরিষা থেকে ১৪ কেজি খৈল আসে।
৫০ বছর ঘানির আয় দিয়েই তেমন কিছুই করতে পারেননি শামসুল ও সলিম। তবে এই ঘানি থেকে যে টাকা আয় হতো, তা জমিয়ে ছেলে-মেয়েদের কমবেশি লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। শুধু সলিম উদ্দীনের ৬ ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছোট ছেলে মোশাররফ হোসেন আটোয়ারী মির্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত।