হাজতের নাম শুনলেই অনেকের কল্পনায় ভেসে ওঠে আতঙ্কের এক কক্ষ। পুলিশের নজরদারি, মামলা নিয়ে চাপ, সামনে কী অপেক্ষা করছে, সেসব ভেবেই কাটে আসামির সময়। কিন্তু সে হাজতই এখন যেন হয়ে উঠেছে আসামিদের একটু হলেও আনন্দের ঠিকানা। দুশ্চিন্তা-ভয় ঝেড়ে তাঁরা সময়টা কাটাতে পারছেন পছন্দের বই পড়ে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উদ্যোগে নগরের ১৬ থানা প্রাঙ্গণে গ্রন্থাগার চালু করা হয়। সে গ্রন্থাগারে থানার পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি বই পড়ার সুবিধা পাচ্ছেন আসামিরাও।
সিএমপির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, ইতিহাস কিংবা দর্শন; দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের লেখকের বইয়ের সম্ভারে সাজানো হয়েছে প্রতিটি গ্রন্থাগার। বসে পড়ার জন্য সীমিত পরিসরে চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিভিন্ন প্রয়োজনে থানায় আসা ব্যক্তিরাই নন, এসব বই পড়ার সুযোগ রয়েছে এলাকাবাসীরও। গ্রন্থাগারে বসে বই পড়ার পাশাপাশি কেউ চাইলে বাড়িতে নিয়েও পড়তে পারবেন। প্রতিটি গ্রন্থাগারে ৩০০ থেকে ৬০০ বই রয়েছে।
নগরের বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের হাজতখানার পাশেই গ্রন্থাগার করা হয়েছে। রাতে অনেক সময় আসামিরা হাজতে বিরক্ত বোধ করলে তাঁদের বই পড়ার আগ্রহ আছে কি না, জানতে চাওয়া হয়। তখন যদি কোনো আসামি বই পড়ার ইচ্ছা পোষণ করেন, তাঁদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। নিজেদের পছন্দমতো তাঁরা বই বেছে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন।’
নগর পুলিশের উপকমিশনার মো. আব্দুল ওয়ারিশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাবেক সিএমপি কমিশনারের আমলে থানার ভেতরে গ্রন্থাগার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। বর্তমানে সিএমপির ১৬ থানার ভেতরে গ্রন্থাগার রয়েছে। এসব গ্রন্থাগারে বসে পুলিশ সদস্যদের বই পড়ার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি আসামিরা বই পড়তে চাইলে তাঁরাও বই নিয়ে হাজতে পড়তে পারছেন।’