অহংকার পতনের মূল। ইসলামের দৃষ্টিতে অহংকার মারাত্মক আত্মিক ব্যাধি। দুনিয়া-আখিরাতে দাম্ভিক ও অহংকারীর পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। মহান আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রথম গুনাহ হলো অহংকার। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, তোমরা আদমকে সেজদা করো, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সেজদা করল। শুধু সে অহংকারবশত অস্বীকৃতি জানাল এবং সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।’ (সুরা বাকারা: ৩৪)
অহংকার একমাত্র আল্লাহর বৈশিষ্ট্য। কারণ, তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সকল গুণের আধার। মানুষ আল্লাহর দুর্বল সৃষ্টি। তাই অহংকার করা তার জন্য মানানসই নয়। এ কারণেই লোকমান (আ.) ছেলেকে উপদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘পৃথিবীতে দম্ভভরে বিচরণ কোরো না, তুমি তো কখনোই পদভারে ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় কখনোই পর্বতপ্রমাণ হতে পারবে না।’ (সুরা ইসরা: ৩৭) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) অহংকারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা নাহল: ২৩)
অহংকারী মানুষ জান্নাতে যাবে না মর্মে হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ একজন সাহাবি বললেন, ‘মানুষ তো চায় যে তার কাপড় সুন্দর হোক এবং তার জুতা সুন্দর হোক (এটা কি অহংকার বলে গণ্য হবে?)।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর। অতএব তিনি সুন্দর পছন্দ করেন। তবে অহংকার হচ্ছে সত্য প্রত্যাখ্যান ও মানুষের অবমূল্যায়ন।’ (মুসলিম: ৯১)
লেখক: মুফতি মুহাম্মদ জাকারিয়া আল-আজহারি মুহাদ্দিস, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম