বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জামালপুর শাখার সামনে অবস্থান নিয়ে ঋণ মওকুফের দাবি জানিয়েছেন অসহায় নারীরা। স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামে একটি এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কৃষি ব্যাংক থেকে নোটিশ পেয়ে তারা গতকাল অবস্থান নেন।
তাদের দাবি, মাত্র ৮ হাজার টাকা ঋণ তুলে ব্যাংক থেকে ৩২ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ পরিশোধের চিঠি পেয়েছেন। তারা সুদ মওকুফ করে ঋণের আসল টাকা পরিশোধের দাবি জানান।
জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক হতদরিদ্রদের স্বনির্ভর হিসাবে গড়ে তুলতে স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামে একটি এনজিওর মাধ্যমে ২০০৫ সালে হতদরিদ্রদের মধ্যে ৫ হাজার টাকা করে ঋণ দেয়। জেলার ৫১৪ জন নারীদের মধ্যে এই ঋণ দেওয়া হয়। এক বছরে এই টাকা কিস্তির মাধ্যমে এনজিও কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেওয়ার কথা। প্রথম কিস্তির টাকা ঋণ গ্রহীতারা পরিশোধও করেন।
পরবর্তীতে তাদের পুনরায় ৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর এনজিওর কর্মীরা আর ঋণের কিস্তি তুলতে যায়নি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঋণ গ্রহীতাদের কাছে জামালপুর কৃষি ব্যাংক থেকে সুদে আসলে ৩২ থেকে ৪০ হাজার টাকা পরিশোধের নোটিশ দেয়। টাকা পরিশোধের নোটিশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং ক্রোকের কথা উল্লেখ থাকায় নারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তারা দুপুরে কৃষি ব্যাংক জামালপুর শাখায় ভিড় করেন। তাদের দাবি এনজিও কর্মীরা তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। হঠাৎ করেই ব্যাংক তাদের নোটিশ দিয়েছে। শহরের দাপুনিয়া গ্রামের আবেদা বেগম বলেন, স্বনির্ভর এনজিও থেকে মুন্নী নামে এক নারী তাদের কাছ থেকে ১৩০ টাকা নিয়ে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিল। এরপর কিস্তির মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করি। তখন আবার ৮ হাজার টাকা দেয়। আমরা মাসে মাসে কিস্তি দিয়ে আসছিলাম। ২ মাস পরে আর টাকা নিতে আসেনি। আমরা মনে করছি হয়ত টাকা মাপ করে দিয়েছে। এখন ব্যাংক থেকে নোটিশ দিয়েছে। আমার স্বামী আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছে। আমি ৮ হাজার টাকা নিছি। ৩২ হাজার টাকার নোটিশ দিছে, আমি এ্তো টাকা কেমনে দিমু।
জামালপুর কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ২০০৫ সালে বাংলাদেম কৃষি ব্যাংক দরিদ্র নারীদের স্বনির্ভর করতে এনজিওর মাধ্যমে ঋণ দেয়। ২০১৭ সালে স্বনির্ভর বাংলাদেশ এনজিও সঙ্গে তাদের চুক্তি বাতিল হয়েছে। তবে ব্যাংকের ঋণ যারা নিয়েছেন তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জামালপুর কৃষি ব্যাংক ৫১৪ জন নারীদের মধ্যে ৯২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। যা সুদে আসলে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৪০০ টাকা। তাদের এই টাকা পরিশোধ করতে হবে। তিনি বলেন এনজিও লোকদের যদি টাকা দিয়ে থাকে তাহলে তাদের ধরে কিস্তির টাকা আদায় করুক।