লালবাগের শহীদ নগর এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর আদি চ্যানেল উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও জেলা প্রশাসন। এদিকে ‘অলিখিত নোটিশে উচ্ছেদ অভিযান’ পরিচালনার জন্য প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।
গতকাল রোববার বেলা ১১টায় বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওবায়দুল্লাহর নেতৃত্বে এই অভিযান শুরু হয়। এদিন আদি চ্যানেলের ওপর অবৈধভাবে গড়ে তোলা বাস্তুহারা লীগের লালবাগের প্রধান কার্যালয়সহ মোট ২৬টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা বন্দরের উপপরিচালক গুলজার আলী বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ছয় দিনব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযানে কয়েকটি বহুতল ভবনসহ মোট ৭৪টি স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা রয়েছে শহীদ নগর এলাকায়।’
এদিকে উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে উচ্ছেদ চলাকালীন মানববন্ধন করেছেন শহীদ নগরের উচ্ছেদের শিকার বাসিন্দারা। উচ্ছেদের শিকার শহীদ নগরের বাসিন্দা মো. সাগীর আহম্মেদ সুজন বলেন, ‘৫০ থেকে ৬০ বছর ধরে আমরা এখানে ইমারত ও সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে ৫-৭ হাজার লোক সুখে-শান্তিতে বসবাস করছি। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদের অভিযানের কথা জানিয়ে মাইকিং করা হয়। আমরা জানতে পারি, ২৬ ডিসেম্বর থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে; যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। অথচ এসব ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি নিয়ে আমাদের পক্ষে জজকোর্ট, হাইকোর্ট ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আদেশ রয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ শাজাহান বলেন, ‘আমাদের এইভাবে হঠাৎ করে চলে যেতে বলার কোনো মানে নেই। আমরা হাইকোর্টের আদেশক্রমে এখানে বসবাস করছি। আমাদের কিছু সময় দেওয়া হোক।’ উচ্ছেদ অভিযানে আল হলি কুরআন নামে একটি মাদ্রাসার স্থাপনাও ভেঙে দেওয়া হয়। মাদ্রাসাসংশ্লিষ্ট মো. আজাদি বলেন, ‘মাদ্রাসা, স্কুলসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ছিল এখানে। এগুলো তো তিন দিনের মধ্যে গুছিয়ে অন্য জায়গায় নেওয়া সম্ভব না।’