পাবনায় মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মো. অন্তর (২০) নামের এক তরুণকে নাটোরের গুরুদাসপুরে এনে হত্যা করা হয়। হত্যার পূর্বে অন্তরকে চোলাই মদ পান করিয়ে অজ্ঞান করানো হয়। তারপর জামা খুলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর একটি বালতিতে সেই জামা লুকিয়ে পাবনা ফিরে যায় দুই হত্যাকারী এরশাদ আলী ও রিপন সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সিপিসি-২ নাটোর ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে মো. অন্তর (২০) হত্যার বর্ণনা দেন র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার।
অন্তর চাটমোহর উপজেলার পাতাইলহাট গ্রামের বাসিন্দা।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার যুবকের নাম এরশাদ আলী (৩৪)। তিনি নওগাঁর আত্রাইয়ের গোপালবাটি এলাকার বাসিন্দা। এরশাদ পেশায় সুইপার। তিনি চাটমোহর মহেলা স্টেশন এলাকার গুয়াখাড়া বাজারের এলাকার বাসিন্দা। অপরজন চাটমোহরের পাটচাটরা এলাকার রিপন সরকার (৩২)। তিনি পেশায় জিলাপি বিক্রেতা। তাঁদের গত সোমবার দিবাগত রাতে চাটমোহরের গুয়াখাড়া স্টেশন বাজার থেকে আটক করা হয়। তাঁরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানায় র্যাব।
র্যাব-৫ অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, গত রোববার নাটোরের গুরুদাসপুরের ধারাবারিষা ইউনিয়নের উদবাড়িয়া মাদ্রাসার পাশে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মরদেহের পাশে বেশ কিছু আলামত পড়ে ছিল। পরে বিভিন্ন থানায় বার্তা পাঠিয়ে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। পরে রহস্যজনক এই হত্যাকাণ্ডে তদন্তে নামেন র্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পাবনার চাটমোহর থেকে এরশাদ ও রিপন এবং সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া রেলস্টেশন প্ল্যাটফর্ম থেকে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার শার্টটি উদ্ধার করা হয়।
অধিনায়ক শাহরিয়ার আরও বলেন, এরশাদ ও রিপন চাটমোহরের মহেলা রেলস্টেশন এলাকায় বসবাস করার সুবাদে তাঁদের সঙ্গে অন্তরের পরিচয় হয়। রিপন ওই বাজারে জিলাপি বিক্রির আড়ালে মাদকের ব্যবসা করতেন। তাঁরা তিনজনই মাদক সেবনে অভ্যস্ত ছিলেন। অন্তরের সঙ্গে রিপনের মাদক নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। গত রোববার ভোরে রিপন এরশাদের ফোন থেকে অন্তরকে ফোন করে কাজের কথা বলে ডেকে নেন। ওই দিন বিকেলে অন্তর রিপন ও এরশাদের সঙ্গে দেখা করার পর তাঁরা তিনজন চার বোতল চোলাই মদ সংগ্রহ করেন। কৌশলে অন্তরকে দেওয়া বোতলে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে একটি সিএনজি ভাড়া করে তাঁরা গুরুদাসপুর উদবাড়িয়া এলাকায় এসে ঘোরাঘুরি করে। রাত ৮টায় তাঁরা উদবাড়িয়া মাদ্রাসার বারান্দায় বসে মদ সেবন করেন। সেবনের পর অন্তর অচেতন হলে তাঁর জামা খুলে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে আটকের পর এরশাদ ও রিপনকে গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।