ঝালকাঠির খাগুটিয়া গ্রামের সুমাইয়া আফরিন ‘হত্যার’ বিচার চেয়েছেন বাবা মনিরুজ্জামান তালুকদার। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে মেয়ে ‘হত্যার’ বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মেয়েকে হত্যা করেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এই ‘হত্যাকে’ আত্মহত্যা বলে প্রচার করছেন। ফলে সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা জেগেছে।
জানা গেছে, ঢাকায় ১৩ জানুয়ারি রাতে যৌতুক ও পারিবারিক কলহের জেরে সুমাইয়াকে নির্যাতন করেন স্বামী ওমর ফারুক। ওই রাতে সুমাইয়া ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন বলে প্রতিবেশীদের জানান অভিযুক্ত স্বামী। পরে পাশের রুমের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। একদিন পর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরের দিন ওমর ফারুকসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন সুমাইয়ার বাবা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে সুমাইয়া আফরিনের (১৯) পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় ঝালকাঠির সুগন্ধিয়া গ্রামের ওমর ফারুকের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে স্বামী যৌতুকের জন্য সুমাইয়াকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় সুমাইয়া বাবার বাড়িতে চলে আসতেন। মৃত্যুর একদিন আগেও তাঁকে নির্যাতন করা হয়।
নিহতের বাবা মনিরুজ্জামানের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা ও সোনার গয়না না দেওয়ার কারণে সুমাইয়াকে মানসিকভাবে অত্যাচার করতেন ওমর ফারুক। এমনকি সুমাইয়া মারা যাওয়ার আগের দিনেও তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে সুমাইয়া জানিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে ওমর ফারুকের বড় ভাই ফোরকান জানান, যৌতুকের জন্য তাঁকে শারীরিক অথবা মানসিক নির্যাতন করা হয়নি। এমনকি তাঁকে হত্যাও করা হয়নি।’
তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যা করেছে বলে তাঁদের দাবি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক মাহমুদা রহমান বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও চলছে। মামলার তদন্ত চলছে।’