ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে প্রতিদিনই অনেকে নানা অভিযোগ ও দাবি নিয়ে কথা বলতে আসেন। তাঁদের সবারই জায়গা হয় চেয়ারম্যানের পাশে রাখা একটি চেয়ারে। সেখানে বসেই তাঁরা কথা বলেন এবং তা মনোযোগের সঙ্গে শুনে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান।
পীরগঞ্জের বড় আলমপুর ইউপিতে বাসিন্দাদের কথা শুনতে এমনই ‘জনতার চেয়ার’ বসিয়েছেন চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মো. হাফিজুর রহমান সেলিম। তিনি ৯ জুন নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সেলিম ইউপি কার্যালয়ে তাঁর চেয়ারের ডান পাশে জনতার চেয়ার স্থাপন করেছেন। তাঁর পাশে বসেই বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ নানা সমস্যার কথা বলছেন। এ ছাড়া তিনি ‘জনতার সেলিম’ নামে ফেসবুকে পেজ খুলেছেন। সার্বিক কার্যক্রমের খুঁটিনাটি তিনি এই পেজে পোস্ট করেন। এসব ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ইতিমধ্যে ইউনিয়নবাসী সাদরে গ্রহণ করেছে।
সম্প্রতি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় নানা মানুষের ভিড়। এর মধ্যে চেয়ারম্যানের পাশের চেয়ারে বসে আছেন এক নারী। তিনি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলছেন। পরিচয় থেকে জানা গেল, তাঁর নাম শাহানাজ রহমান। পেশায় শিক্ষক। পত্নীচড়া দ্বিমুখী বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় আছেন। ইউনিয়নের আকুবেরপাড়া গ্রামেই তাঁর বাড়ি।
তারপর ওই বিশেষ চেয়ারে বসেন ৭২ বছর বয়সী সুভাস চন্দ্র শীল। এবার তিনি বয়স্ক ভাতার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। বাড়ি শ্যামদাসেরপাড়া গ্রামে।
কথা হলে সুভাষ বলেন, ‘এত দিন কেটে গেল, কেউ বয়স্ক ভাতা দেয়নি। সেলিম বাবা মোক বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করি দিলি।’
ব্যতিক্রমী উদ্যোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান সেলিম বলেন, ‘জনগণ অফিসে এসে আমার ডানের চেয়ারে বসবেন, সুখ-দুঃখের কথা বলবেন। আমি কথাগুলো শুনব। মানুষের কথা শোনারও আমাদের অনেকেরই সময় নেই। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছি। ভেবেচিন্তে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়। কারণ রাজনীতিবিদের মূলধন হলো মানুষ। তাঁদের শ্রদ্ধা করতেই হবে।’