বিশ্বনাথ মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হায়েনা ও তাদের দেশীয় দোসরদের পরাজিত করে বিশ্বনাথে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান।
১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর কুরুয়া, তাজপুর, দয়ামির, নাজিরবাজার ও রশিদপুর শত্রুমুক্তের ঘোষণা দেন মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু বিশ্বনাথ থানার ওসি মো. আবুল হোসেন, দারোগা আলী আহমদ এবং রাজাকারেরা বিশ্বনাথ সদরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনে বাধা দেন।
এ খবর শুনে ৫ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার মো. আবদুন নুরের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা সদরে পৌঁছে ওসি আবুল হোসেনসহ অন্যদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন। আত্মসমর্পণের ঘটনায় রাত গভীর হয়ে যাওয়ায় বিজয় পতাকা ওই দিন আর উত্তোলন করা হয়নি।
১০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বিশ্বনাথ থানা সদরে বর্তমান রামসুন্দর সরকারি অগ্রগামী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ৫ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার মো. আবদুন নূর। এ সময় তিনি বিশ্বনাথকে শক্র মুক্ত ঘোষণা করেন। পরে এ সমাবেশ থেকেই বিশ্বনাথ ইউনিয়নের মিরেরচর গ্রামের আবদুল মুতলিব বিএসসিকে থানা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন তিনি। বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেন। পতাকা উত্তোলনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে বিলম্ব হওয়ায় পরদিন আবার সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১১ ডিসেম্বর দৌলতপুর গ্রামের আবদুর রব চৌধুরী ওরফে সমুজ মিয়ার সভাপতিত্বে বিজয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ৫ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার মো. আবদুন নূর।
বিশেষ অতিথি ছিলেন একই সেক্টরের ল্যান্স নায়ক গোলাম মোস্তফা। সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে বক্তব্য দেন মরমি কবি হাছন রাজার দৌহিত্র সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান তৈমুর রাজা চৌধুরীর ছেলে দেওয়ান সমশের রাজা চৌধুরী, থানা প্রশাসক আবদুল মুতলিব বিএসসি, মিরেরচর গ্রামের আবদুল মন্নান মনাফ, চান্দসির কাপন গ্রামের মরহুম ইসকন্দর আলী সারং, একই গ্রামের কয়েছ চৌধুরী, মুফতিরগাঁও গ্রামের আকমল আলী, ধর্মদা গ্রামের তজম্মুল আলী, নোয়াগাঁও গ্রামের আছলম খান, রাজনগর গ্রামের একরাম মিয়া, নরসিংপুর গ্রামের আইন উল্লাহ প্রমুখ।