হোম > ছাপা সংস্করণ

দখলের ধকলে ধুঁকছে বংশী

অরূপ রায়, সাভার থেকে

বংশী নদের তীরে সাভারের নামাবাজার এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাংশ সরকারি জমিতে অবৈধভাবে আধাপাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছেন সম্ভু সাহা। অথচ স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ে তাঁর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

শুধু সম্ভু সাহা নন, নামাবাজার এলাকায় বংশী নদ ও তীর দখল করে গড়ে তোলা কয়েক শ অবৈধ স্থাপনার তথ্য নেই সাভারের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে।

গত বছর ৮ ডিসেম্বর সাভারের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বংশী নদ ও নদের তীরের সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারসহ সরকারির জমির তথ্য চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এক পত্রে তাঁর দপ্তরে নদের তীরের সরকারি জমির কোনো তথ্য নেই বলে জানান। একই পত্রে সরকারি জমিতে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারদের তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়।

এদিকে, হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন এক আদেশে বংশী নদের ভেতরে সব ধরনের ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিতে বলেন। একই রুলে নদ দখল ও স্থাপনা নির্মাণকারীদের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। বংশী নদ রক্ষায় নির্দেশনা চেয়ে সাভারের বাসিন্দা ব্যারিস্টার বাকির হোসেন মৃধার করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গত প্রায় দুই বছরেও আদালতের ওই আদেশ প্রতিপালন হয়নি। উল্টো নদের ভেতরে ও তীরে দখল অব্যাহত থাকে।

ব্যারিস্টার বাকির হোসেন মৃধা বলেন, আদেশ প্রতিপালন না হওয়ায় হাইকোর্ট গত রোববার পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ঢাকার জেলা প্রশাসক, সাভারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বংশী নদ ঢাকার ধামরাই ও সাভার উপজেলা সীমানা ঘেঁষে প্রবহমান। দখলের কারণে সাভারের ফুলবাড়িয়া থেকে নয়ারহাট পর্যন্ত নদের ১৫ কিলোমিটার অংশ ক্রমশ সরু হয়ে আসছে। সাভারের নামাবাজার ও নয়ারহাট বাজারের পাশে দখল প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নামাবাজার এলাকার দখলদারদের প্রায় সবাই বাজারের ব্যবসায়ী। নয়ারহাট এলাকার দখলদারদের অধিকাংশই প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বালু ব্যবসায়ী। ব্যক্তিমালিকানার জমি ছাড়া পৌরসভার হোল্ডিং নম্বর এবং বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়ার নিয়ম না থাকলেও নদ ও তীরের দখলদারেরা তা পেয়ে যাচ্ছেন।

তাঁরা জানান, প্রথমে নদের তীরে আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হয়। এরপর সেখানে টিন ও বাঁশ দিয়ে ছোট স্থাপনা নির্মাণ করেন দখলদারেরা।

নামাবাজার এলাকায় নদের তীরে সরকারি জমিতে একাধিক স্থাপনা নির্মাণ করেছেন মনির হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি অবৈধভাবে গড়ে তোলা একটি ঘরে পশু ও পাখির খাদ্যের ব্যবসার জন্য রেখে বাকি স্থাপনা বিক্রি করে দিয়েছেন।

মনির হোসেনের প্রতিষ্ঠান এমআরএল ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক রঞ্জন দাস বলেন, অন্যরা যেভাবে সরকারি জমি দখল করেছেন, তাঁর মালিকও একইভাবে দখল করেছেন।

নয়ারহাট বাজারের অবৈধ দখলদার সাগর মিষ্টি ঘরের মালিক গোপাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, সাত বছর আগে জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ লাখ টাকায় তিনি ঘরের দখল কিনে নিয়েছেন। বংশী নদে বালু ফেলে জসিম উদ্দিন আধাপাকা ঘরটি নির্মাণ করেছিলেন।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করা আমাদের জন্য শিরোধার্য। তা পুরোপুরি প্রতিপালন করা না হলেও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে ছোটখাটো অভিযান পরিচালনা করেছি।’

ইউএনও আরও বলেন, অবৈধ দখলদারদের তালিকা একটি চলমান বিষয়। কয়েক বছর আগে নামাবাজার এলাকার ২৯ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল, যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আছে। এরপর আর তালিকা করা হয়নি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ